ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মোটরসাইকেলে ট্রেনের ধাক্কা, লাফিয়ে বাঁচলেন যুবদল নেতা

জেলা প্রতিনিধি | কুষ্টিয়া | প্রকাশিত: ০৫:২৮ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেলপথের কুমারখালী রেলস্টেশনের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত ফুলতলা মোড়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক যুবদল নেতা আহত হয়ে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও পাশে থাকা আরও একটি মোটরসাইকেল দুমড়েমুচড়ে গেছে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। মোড়টি কলেজ মোড় নামেও পরিচিত। এটি কুমারখালী শহর, উপজেলা পরিষদ চত্বর, থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাপ্তাহিক হাটে যাতায়াতের বিকল্প সড়কের মোড়। মোড়ের পাশেই কুমারখালী সরকারি কলেজের অবস্থান।

স্থানীয়রা জানান, এই মোড় দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে নেই রেলগেট, গেটম্যান কিংবা সাইনবোর্ড বা পাহারাদার। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সুস্থ ও নিরাপদে চলাচলের জন্য দ্রুত রেলগেট স্থাপনের দাবি জানান স্থানীয়রা।

দুর্ঘটনায় আহত যুবদল নেতার নাম মো. শহিদুল ইসলাম (৪০)। তিনি উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ও হাসিমপুর গ্রামের মৃত সামছুদ্দিনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস হর্ন বাজিয়ে দ্রুতগতিতে রাজবাড়ী থেকে কুষ্টিয়ার দিকে যাচ্ছিলো। গেট না থাকায় পালসার মোটরসাইকেলে ঝুঁকি নিয়ে ফুলতলা মোড় পার হওয়ার চেষ্টা করেন শহিদুল। তখন হঠাৎ ট্রেনটি কাছে চলে এলে মোটরসাইকেল ফেলে লাফ দিয়ে প্রাণে বেঁচে যান শহিদুল। আর ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তার মোটরসাইকেলটি ছিটকে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি মোটরসাইকেলের ওপর এসে পড়ে। এতে দুইটি মোটরসাইকেল দুমড়ে মুচড়ে যায়। আহত শহিদুলকে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মোটরসাইকেলে ট্রেনের ধাক্কা, লাফিয়ে বাঁচলেন যুবদল নেতা

কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত মিষ্টি ব্যবসায়ী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাজল হোসেন (৩১) বলেন, এখানে রেলগেট নেই। ট্রেনের হর্ন শুনে রেললাইনের পাশেই মোটরসাইকেল থামিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেসময় শহিদুল পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে পার হতে গেলে ট্রেনটি খুব কাছে চলে আসে। তখন তিনি মোটরসাইকেল ফেলে লাফ দেন। ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলটি ছুটে এসে আমার মোটরসাইকেলের ওপর পড়ে। এতে দুইটি মোটরসাইকেলেরই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শহিদুল আহত হয়েছেন।

ফুলতলা মোড়ে প্রায় ৯ বছর ধরে কলম, খাতা ও ফটোকপির ব্যবসা করছেন আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, গেট না থাকায় ট্রেন আসছে জেনেও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মানুষ। ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে প্রায় দিনই মানুষ বিপদের সম্মুখীন হয়। অনেকেই পার হতে না পেরে গাড়ি ফেলে লাফিয়ে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে ফেরেন। এখানে রেলগেট স্থাপন হলে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।

আহত যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক থেকে বাড়ির দিকে ফিরছিলাম। পথিমধ্যে রেললাইনের মাঝামাঝি পৌঁছালে ট্রেনটি খুব কাছাকাছি চলে আসে। তখন মোটরসাইকেলটি পেছানোর চেষ্টা করি। কিন্তু পিছনে আরেকটি মোটরসাইকেল থাকায় পেছানো সম্ভব হয়নি। সেসময় দিগ্‌বিদিক হারিয়ে লাফ দেই। ট্রেন এসে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে আমার হাত কেটে গেছে, পায়ে আঘাত লেগেছে। আর গাড়িটি ভেঙে শেষ হয়ে গেছে।

মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করে কুমারখালী রেলস্টেশনের মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রোববার দুপুরে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের সঙ্গে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তেমন হতাহত না হলেও মোটরসাইকেলটি ভেঙে গেছে। প্রকৃতপক্ষে ফুলতলা এলাকাটি রেল কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত। সেজন্য গেট স্থাপন হয়নি। তবে স্থানীয়রা লিখিতভাবে অভিযোগ করলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট কাছে পাঠানো হবে।

আল-মামুন সাগর/এমএন/এমএস