শিশু আয়েশার মৃত্যু
ঘরের দরজায় তালা লাগানোর প্রমাণ পাওয়া যায়নি: পুলিশ
লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তের আগুনে নিহত শিশু আয়েশা আক্তার
লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তের আগুনে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের মেয়ে শিশু আয়েশা আক্তারের (৮) মৃত্যুর দুই দিনেও মামলা করা হয়নি। এ ঘটনায় তিনিসহ তার আরও দুই মেয়ে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অপর মেয়ে সালমা আক্তার স্মৃতি (১৭) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। দগ্ধ আরেক মেয়ে সামিয়া আক্তার বিথির (১৪) শরীরের দুই শতাংশ পুড়েছে। দগ্ধ বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় দুর্বৃত্তায়ন-মবের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি প্রাথমিক তদন্তে ঘরের দরজায় তালা লাগানোর প্রমাণও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ঢাকায় হাসপাতালে তাদেরকে দেখতে যান। সেখান থেকে বের হয়ে তারা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামে বেলালের বাড়ির উদ্দেেশে রওয়ানা দিয়েছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রাতে ওই বাড়ির সামনেই সংক্ষিপ্ত সভায় রিজভী বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে বাইরে থেকে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে পরিবার অভিযোগ তুললেও পুলিশ বলছে, দুর্বৃত্তায়ন-মবের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:
তালা লাগিয়ে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন, প্রাণ গেলো ঘুমন্ত শিশুর
প্রাথমিক তদন্তে ঘরের দরজায় তালা লাগানোর প্রমাণও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবু তারেক। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। কাউকে আটক করাও সম্ভব হয়নি। আমরা পরিবারকে মামলা করতে বলেছি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।’
এদিকে সন্ধ্যায় স্থানীয়দের উদ্যোগে ওই বাড়িতে নিহত আয়েশার আত্মার মাগফিরাত কামনা ও আহতদের সুস্থতায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে এলাকার লোকজন অংশ নেন।
বেলালের শ্যালক মো. শুভ বলেন, ‘আমার বড় ভাগনি স্মৃতির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার বাঁচার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। চিকিৎসক বলেছেন, হয়তো দু-তিনদিন থাকতে পারে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
স্থানীয় ফাইভ স্টার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নোমান সিদ্দিকী বলেন, ‘দগ্ধ বিথি ও নিহত আয়েশা আমার স্কুলের শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাত ১০টার দিকেও বিথিসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনলাইনে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য কার্যক্রম বুঝিয়ে দিয়েছি। তখন বিথির সঙ্গে আয়েশাকেও দেখেছি। দুই ঘণ্টা পর সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। ঘটনাটি মর্মান্তিক।’
ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি বলেন, ‘ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। এ ধরনের ঘটনা আমার ইউনিয়নে আর ঘটেনি। দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।’
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলালের ঘরে দুর্বৃত্তদের আগুনে তার মেয়ে আয়েশা আক্তার (৮) মারা যায়। এছাড়া বেলালসহ তার দুই মেয়ে স্মৃতি আক্তার ও বিথি আক্তার দগ্ধ হন।
বেলাল সদর হাসপাতালে এবং তার দুই মেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
কাজল কায়েস/এসআর/এমএস