কারাগারে ঠিকাদার, থমকে আছে ১২৩ কোটি টাকার সেতুর কাজ
থেমে আছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের খয়রাবাদ নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ। ছবি-জাগো নিউজ
প্রকল্পের প্রধান ঠিকাদার একজন আওয়ামী লীগ নেতা। বর্তমানে তিনি কারাগারে। এজন্য থমকে গেছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খয়রাবাদ নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি সেতুর কাজ।
প্রায় ৭৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হলেও অগ্রগতি নেই বললেই চলে। ফলে ১২৩ কোটি টাকার সরকারি এই প্রকল্প নিয়ে বাড়ছে অনিশ্চয়তা।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, দপদপিয়া ইউনিয়নের খয়রাবাদ নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত হয়। মোট ব্যয় ধরা হয় ১২৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল কাজ শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ৯ এপ্রিল প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। তবে প্রকল্পের বড় অংশ এখনো কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পের প্রধান ঠিকাদার ও আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার বর্তমানে কারাগারে। এ কারণে নির্মাণকাজের তদারকি ও ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে শ্রমিক সংকট, নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহে বিঘ্ন এবং সাইটে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পুরো প্রকল্পে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ পর্যন্ত নদীর দুই পাড়ে মাত্র ১৮টি পিলারের আংশিক কাজ শেষ হয়েছে। কয়েকটি স্প্যান বসানো হলেও বাকি কাঠামো এখনো অসম্পূর্ণ। অথচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরইমধ্যে প্রায় ২০ কোটি টাকা অগ্রিম বিল উত্তোলন করেছে। সেই তুলনায় মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি খুবই সামান্য।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ হাওলাদার, জাকির তালুকদার ও রিয়াজ মৃধা বলেন, সেতুটি চালু হলে মূলত বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া, কলসকাঠি ও চরাদি ইউনিয়নের মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। তবে নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের জন্য এই সেতুর কার্যকর প্রয়োজন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পাশাপাশি সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক এখনো চলাচলের অনুপযোগী। আশপাশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা উল্লেখযোগ্য জনবসতি না থাকায় বিপুল ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়েও তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর/এএসএম