ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বৈদ্যুতিক মিটার চুরি ঠেকাতে খাঁচার উপদেশ

প্রকাশিত: ০৬:১৬ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৭

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় বৈদ্যুতিক তিন ফেসের সংযোগের সেচ প্রকল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চুরি হচ্ছে বৈদ্যুতিক মিটার। দুর্বৃত্তদের রেখে যাওয়া চিরকুটের মোবাইল নম্বরে টাকা বিকাশ করলে তবেই ফেরৎ দেয়া হচ্ছে মিটার।

তাই জনসচেতনতা বাড়াতে জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে চাতাল, গভীর নলকুপসহ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের নিজ নিজ মিটারে লোহার খাঁচা বানিয়ে সেটির ভেতর মিটার রাখতে এবং গভীর নলকূপের ঘরে পাহারা বসাতে উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলজুড়ে মাইকিং করা হয়েছে।  

এদিকে চোর ধরা না পড়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুর্বৃত্তরা একমাসের মধ্যে একাধিক বাড়ি থেকে বৈদ্যুতিক মিটার ও গভীর নলকুপ চুরি করেছে।

মিটার খুলে নিয়ে যাওয়ার সময় দৃর্বৃত্তরা সেখানে সাদা কাগজের চিরকুটের উপর নম্বর লিখে যাচ্ছে যোগাযোগের জন্য। সেই নম্বরে যোগাযোগ করে দুর্বৃত্তদের চাহিদার টাকা বিকাশ করলেই মিটার মালিকদের জানিয়ে দেয়া হয় মিটার কোথায় রাখা আছে। সেখান থেকে উদ্ধার করে পুনঃসংযোগ করতে হচ্ছে মিটার ব্যবহারকারীদের।

অনেক সময় এলাকার চিহিৃত বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেও মিটার উদ্ধার হচ্ছে। তবে অনেকে প্রাণভয়ে ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।  

সর্বশেষ গত সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মারমা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন এর সেচ প্রকল্পের ট্রাঞ্চফরমার চুরি হয়েছে। চোর বা চোরেরা প্রায় পৌনে ১ লাখ টাকা মূল্যের বৈদ্যুতিক ট্রাঞ্চফরমারের ভিতর থেকে মূল্যবান তামার তারের কুন্ডলী খুলে নিয়ে কভার ফেলে রেখে গেছে।

আক্কেলপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জানা যায়, চুরি যাওয়া মিটারগুলোর দাম থ্রি-ফেইজ হলে ২৫ হাজার টাকা ও সিঙ্গেল ফেইজ হলে ১৪শ টাকা।

কিন্ত দুর্বৃত্তরা মুঠোফোনে সেচ মালিকদের হুমকি দিচ্ছে। চুরি করে নিয়ে যাওয়া মিটার তাদের কাছ থেকেই নিতে হবে। সেটা না করলে বার বার সেচের যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়াসহ সেচ ঘর পুড়িয়ে ও সেচ কার্য বন্ধ করে দেয়া হবে। এমনটায় জানালেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন গভীর নলকুপের পরিচালক ও কৃষক।  

আক্কেলপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি জানুয়ারি মাসে আটটি গভীর নলকূপ ও দুটি কলকারখানার তিন ফেসের মিটার চুরি হয়। গ্রাহকেরা আক্কেলপুর থানা পুলিশকে জানিয়েও কোনো ফল পাননি।

আক্কেলপুর পৌর শহরের রোজি চালকলের মালিক মজিবর রহমান বলেন, দুষ্কৃতকারীরা আমার চালকলের মিটার চুরি করেছিল। সেখানে তারা একটি কাগজে মুঠোফোনের নম্বর রেখে যায়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করে একদিন পরেই বাড়ির পাশে একটি খড়ের গাদায় মিটারটি পেয়েছি।

তবে মিটার ফেরত পেতে দুষ্কৃতকারীদের কত টাকা দিয়েছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ইয়াকুব আলী আকন্দ বলেন, এই উপজেলায় হঠাৎ করেই গভীর নলকূপ ও কল-কারখানার মিটার চুরি বেড়ে গেছে। এসব গ্রাহক দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করে টাকার বিনিময়ে আবার মিটার ফেরতও পাচ্ছেন। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা পর্দার আড়ালেই থেকে যাচ্ছে, চুরি কমছে না। মিটার চুরি রোধেই এই মাইকিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আক্কেলপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ পাঁচটি মিটারও উদ্ধার করেছে। আমরা সংঘবদ্ধ চক্রটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। দুষ্কৃতকারীদের মুঠোফোন নম্বর ট্র্যাক করেশনাক্ত করা গেছে। এখন শুধু আটক করার অপেক্ষা।

রাশেদুজ্জামান/এফএ/এমএস