ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ইটভাটার গ্যাসে পুড়েছে ৫০ বিঘা জমির ধান

জেলা প্রতিনিধি | জয়পুরহাট | প্রকাশিত: ০১:১২ পিএম, ০৮ মে ২০১৭

জয়পুরহাট সদর উপজেলার শালপাড়া এলাকার থিপুর, মাধাইনগর, বালিয়াতৈর, কৈকুড়ি গ্রামের মাঠে হারুন অর রশিদ নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর ইটভাটার নিগর্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ বিঘা ধান ক্ষেত।

এছাড়া ভুট্টা, পাট, আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, লিচু, জলপাইসহ নানা জাতের ফল নষ্ট হয়ে ঝরে পড়েছে গাছ থেকে।

সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হারুন অর রশিদ ওই গ্রামের মাঠে তিন ফসলি জমি থাকার পরও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অপেক্ষাকৃত অনেক ছোট চিমনি দিয়ে গত ৫-৬ বছর আগে গড়ে তোলেন ইটভাটা।

ফলে ৪-৫ বছর ধরে ইটভাটার ধোঁয়ার নির্গত গ্যাসে কৃষকরা এমন ক্ষতির শিকার হলেও প্রভাবশালী ওই ইট ভাটা মালিকের দাপটে মুখ খুলতে সাহস পাননি নিরীহ কৃষকরা। এই ইটভাটার নির্গত গ্যাসে প্রতি বছরই একই ধরনের ক্ষতি হলেও ক্ষতি পূরণ পায়নি কৃষকরা।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ৪৬ জন কৃষক ২৪ এপ্রিল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ব্যাপারে আবেদন করলে নির্বাহী কর্মকর্তা পরের দিন সংশ্লিষ্ট এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাসহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিলে তারা তদন্ত শেষে ৩০ এপ্রিল ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৩০০ শতক জমির ধান ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন।

তদন্ত রিপোর্ট সূত্রে জানা যায়, রঘুনাথপুর গ্রামের ফরিদ এর ৫৩ শতক ও হাবিব ৫০ শতক, মাধাইনগর গ্রামের হাতেম আলীর ৪০ শতক, এরশাদ ৬৬ শতক, মুমিন ৪০ শতক, থিপুর আব্দুর রশিদ ৫০ শতক, বালিয়াতৈর আনিছুর রহমান ২৫ শতক, কৈকুড়ি জনাব আলী ৫০ শতক ও হেলাল ৫০ শতক।

এছাড়া ভূট্টার জমি বালিয়াতৈর এর মোস্তাক হোসেনের ১৬ শতক ও পাটের জমি মাধাইনগরের আজিবর রহমারের ৩৩ শতকসহ ওই চার গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৩০০ শতক জমির ধান নষ্ট হয়েছে যা থেকে প্রায় ৮ শত মণ ধান পাওয়া যেত।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বালিয়াতৈরের শফিকুল ইসলাম, কোরবান আলী, মাধাইনগরের মীর শহীদ, একরামুল, থিপুরের গোলাম মোস্তফা, আব্দুল আলীম, কৈকুড়ির জনাব আলী ও হেলাল হোসেনসহ অনেক কৃষক জানান, প্রত্যেক বছরই  ইটভাটার নির্গত গ্যাস থেকে আমাদের ফসলের ক্ষতি হয়। আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিলে ভাটার মালিক প্রভাবশালী কয়েকজন কৃষককে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ম্যানেজ করে ফলে বারবারই আমরা গরীব কৃষকরা লোকসানের মধ্যে থেকে যাচ্ছি। এ জন্য আমরা এখান থেকে এই ইটভাটার উচ্ছেদ চাই।

এ ব্যাপারে শত চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত ভাটার মালিক হারুন অর রশিদকে। বাধ্য হয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনটি বন্ধ রাখেন।

জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় জানান, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হলেও দেশের কৃষি অর্থনীতিতে যে ঘাটতি হবে তা পুষবে না কোনভাবেই।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিপূরণসহ ইটভাটা উচ্ছেদের ব্যাপারে  ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আবেদন আমি পেয়েছি। এ ব্যাপারে সীমাবদ্ধ ক্ষমতার কথা স্বীকার করে কৃষকদের ক্ষতিপূরণসহ নেয়া হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং বন ও পরিবেশ অধিদফতরকে বিষয়টি জানানো হবে।

রাশেদুজ্জামান/এএম/এমএস