ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জয়পুরহাট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ

প্রকাশিত: ০৬:৫৫ এএম, ১৬ মে ২০১৫

জয়পুরহাটের জনপদের উন্মুক্ত জলাশয় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ। খাল-বিল, নদী-নালাবেষ্টিত এ জনপদের মুক্ত জলাশয়গুলোয় এক সময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেখা গেলেও এখন বদলে গেছে সে চিত্র।  কৈ, শিং, শোল, বোয়াল, টাকি, ফলি, পুঁটি, চিংড়ি, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।

গ্রামের কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা মিলে সেচে আবার কখনো বা জাল টেনে, কোঁচ, খুচইন, বুচনা ও চাঁই পেতে মাছ শিকার করত। খালই,পাতিল কিংবা ব্যাগ ভর্তি মাছ নিয়ে সবাই যখন বাড়ি যেত তখন বাড়ির নারীরা সে দৃশ্য দেখে খুশিতে যেন আটখান হতো। মাছ শিকারের এসব উপকরণ এখনো আছে ঠিকই কিন্ত নদী-নালা, খাল-বিল কিংবা উন্মুক্ত জলাশয়ে আগের মতো এখন আর এসব মাছের দেখা মেলে না।

এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, ফসলি জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশকের ব্যবহারের কারণে মাছের প্রজনন ক্ষমতা দিন-দিন কমে যাচ্ছে। এছাড়া মা মাছগুলো যখন ডিম ছাড়ে তখন পোনা মাছগুলো কীটনাশকের কারণে মারা যায়। এ কারণে মাছের যেভাবে বংশবিস্তার হওয়ার কথা তা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আর তাই উন্মুক্ত জলাশয়গুলো মাছশুন্য হয়ে পড়ায় এখন পুকুরে হাইব্রিড জাতের মাছ চাষের প্রতি ঝুঁকছেন সবাই।

জয়পুরহাট জেলা মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, দেশে মোট জনসংখ্যার জন্য বর্তমানে মাছের চাহিদা রয়েছে বছরে ৩৪ লাখ টন। এর মধ্যে ১৪ লাখ টন মাছ মুক্ত জলাশয় (নদী-নালা, খাল-বিল) থেকে এবং ১৮ লাখ টন মাছ চাষ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে আমাদের দেশে ২ লাখ টন মাছের ঘাটতি রয়েছে। আগে চাহিদা অনুপাতে দুই-তৃতীয়াংশ মাছ পাওয়া যেত প্রাকৃতিক জলাধার থেকে। এটি আস্তে-আস্তে হ্রাস পেতে চলছে।

জয়পুরহাট জেলায় বছরে ১৬ হাজার ৭২৩ টন মাছের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৩৭৯ টন আসে হাইব্রীড জাতের মাছ থেকে। আর বাকী ৩ হাজার ৩৪৪ টন দেশীয় প্রজাতির মাছ থেকে আসত। কিন্ত দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়াতে বাজারে মাছের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।

জয়পুরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র সাহা বলেন, এলাকার মুক্ত জলাশয়ে যেখানে মাছের উৎপাদন বেশি থাকার কথা সেখানেই এখন মাছের দেখা নেই। এ জেলায় অনেক উন্মুক্ত জলাশয় থাকলেও সুগার মিলের বর্জ্য,কীটনাশকের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়া ও নদী-নালা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে দিন-দিন দেশি মাছশুন্য হয়ে পড়ছে।

এসএস/আরআই