জাজিরায় বোমা বানাতে গিয়ে যুবক নিহত
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের ইয়াসিন মাদবর কান্দি গ্রামে বোমা বানাতে গিয়ে অনিক (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছে আরো দুই জন। এদের মধ্যে মোকসেদ মাদবর নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা করে গবাদি পশু লুট করে নেওয়া হয়েছে। মামলা ও হামলার ভয়ে এলাকা এখন পুরুষ শুণ্য।
জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, বিলাশপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার মেছের আলী মাদবর ও বর্তমান চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারীর মধ্যে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন থেকে দ্বন্দ চলে আসছিল। গত এক সপ্তাহ যাবত উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া একে অপরের বাড়ি ঘরে ককটেল হামলা চালিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মেছের মাস্টারের সমর্থক মনির হোসেন মাদবরের ছেলে অনিক মাদবরসহ কয়েকজন মিলে ইয়াসিন মাদবরের কান্দি রশিদ খন্দকারের বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড় ও পাট ক্ষেতের মধ্যবর্তী স্থানে বসে ককটেল বোমা তৈরি করছিল। এ সময় আগে থেকে বানিয়ে রাখা ককটেলগুলোর বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে অনিক মাদবর, মোকসেদ মাদবর ও সাগর খান নামে তিন যুবক আহত হয়। আহতদের মধ্যে অনিক ও মোকসেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে বেলা সোয়া তিনটার দিকে অনিককে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক। মোকসেদ মাদবর এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অনিক মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে মেছের মাদবরের সমর্থকরা কুদ্দুস বেপারীর সমর্থক সুরৎখার কান্দি গ্রামের আলী হেসেন শেখ এর ৬টি, আলী আহমদ শেখের ৭টি, খোদাবক্স বেপারীর ২টি, ইউনুছ ভূইয়ার ৩টিসহ মোট ২৫ গরু লুট করে নিয়ে গেছে।
মেছের মাদবরের বড় ছেলে সালেক মাদবর বলেন, আমাদের সমর্থকরা কারো বাড়ি ঘরে হামলা করেনি। কারো কিছু লুট করে নেয়নি। কুদ্দুস বেপারীর লোকেরাই আমার চাচাতো ভাই অনিকের উপর বোমা হামলা করেছে। অনিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) নিয়ে গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
বিলাশপুর ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী বলেন, এলাকায় আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্শান্নিত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মেছের মাদবর তার সমর্থকদের দিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত আমার সমর্থকদের উপর হামলা করে আসছে। আমার নিজ বাড়িতে ও গত এক সপ্তাহ আগে শতাধিক ককটেল নিক্ষেপ করেছে। মঙ্গলবার আবার নতুন করে ককটেল হামলার জন্য ককটেল বানাতে গিয়ে মেছের মাদবরের ভাতিজা মারা গেছে। তার সমর্থকরা আমার সমর্থকদের ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করে ও ২৫টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে।
জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল থেকে বোমা তৈরির কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। বোমা তৈরির আলামত পাওয়া গেছে। বেশ কিছু জর্দার কৌটা, কাঠের গুড়াসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় একজন মারা গেছে বলেও জানান তিনি।
ছগির হোসেন/এআরএ/আরআইপি