আলুর চিপস ঘুরিয়েছে তাদের অর্থনীতির চাকা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম শ্রীকৃষ্টপুরের আলুর চিপস এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা জেলায়। এখানকার আলুর চিপস ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে আলুর চিপস এই গ্রামের মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। আগে গ্রামের মানুষদের দিন-মজুরের কাজ করে যেখানে জীবিকা নির্বাহ করতে হতো, এখন আর তাদেরকে জীবিকার জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হয় না। গ্রামের ২০০ পরিবারের ভাগ্য যেন বদলে দিয়েছে আলুর চিপস তৈরির কাজ।
শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের পরিশ্রমী মানুষগুলো আলুর মৌসুমে আলু সংগ্রহ করে সেগুলো সিদ্ধ করার পর কেটে রোদে শুকিয়ে তৈরি করেন চিপস। এরপর প্রস্তুত করা চিপসগুলো বস্তায় করে রেখে দেন। সারা বছর স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে তারা ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বড় শহরে এই চিপস সরবরাহ করছেন।
শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের আলুর চিপস ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ও তাইফুল ইসলাম। তারা জাগো নিউজকে জানান, আমাদের গ্রামের মানুষেরা আগে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতেন। খেয়ে না খেয়ে আমাদের দিন চলত। আমাদের ছেলে-মেয়েরাও শিক্ষা ছেড়ে দিন-মজুরের কাজ করতো। কিন্ত আলুর চিপস যেন আমাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। গ্রামের মানুষদের উপার্জনের এখন একমাত্র অবলম্বন আলুর চিপস। পাঁচ মণ আলু সিদ্ধ করে সেগুলো চাকা করে কেটে রোদে শুকিয়ে এক মণ চিপস তৈরি করা যায়। এতে সব মিলিয়ে ৪/৫ হাজার টাকা খরচ হলেও মণ প্রতি লাভ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। যত বেশী আলুর চিপস তৈরি করে সংরক্ষণ করে রাখা যাবে তত বেশী লাভ হবে।
নূরজাহান, রেজাউল ইসলামসহ অনেক দরিদ্র চিপস প্রস্তুতকারীরা জানান, স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা পেলে তারা আরো উন্নতি লাভ করতে পারবেন।
জয়পুরহাট বিসিক-এর শিল্পনগরী কর্মকর্তা আকতারুল আলম চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, আলুর চিপস তৈরি ও বিপণনে প্রয়োজন হলে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তাসহ সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা করা হবে।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসাণি অধিদফতরের উপ-পরিচালক এ জেড এম ছাব্বির ইবনে জাহান জাগো নিউজকে বলেন, এভাবে আলুর বহুবিদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে একদিকে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে আলু চাষিদের উৎপাদিত আলুর ন্যায্যমূল্যও নিশ্চিত হবে।
এমজেড/এমএস