ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বর্ষায় জনপ্রিয় চাক জাল

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ০৭:১৫ এএম, ১৬ জুলাই ২০১৭

চিকন সুতা ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি, চাকার মতো ঘোরানো যায়, বিশেষ ধরনের এই জালের নাম চাক জাল। স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি টোনা জাল নামে পরিচিত। বর্ষা মৌসুমে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এ জালের বেচা-কেনা হয়।

ঝালকাঠি পৌর শহরের টাউনহলের সামনে বর্ষা মৌসুমের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার সুতা এবং বাঁশের কঞ্চির তৈরি চাক জালের হাট বসে। প্রতিটি জাল আকারভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়।

চাক জালের কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে বর্ষাকালে ধানখেত ও নালায় বাঁশের তৈরি চাঁই (এক ধরনের ফাঁদ) পেতে মাছ ধরা হতো। এক দশক ধরে উপকূলীয় এলাকায় বাঁশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁইয়ের উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। তাছাড়া বাঁশের সংকটও রয়েছে। অন্যদিকে চাক জাল তৈরিতে খরচ কম। জাল তৈরির কাঁচামাল সহজে পাওয়া যায়। তাই বাঁশের তৈরি চাঁইয়ের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চাক জাল। 

Chak

এটি দেখতে বুচনা চাঁইয়ের মতো। শুধু বাঁশের পরিবর্তে সুতার জাল ব্যবহার করা হয়। সাধারণত চিংড়ি মাছ ধরার জন্য কৃষক ও মৌসুমি জেলেদের কাছে চাক জালের চাহিদা বেশি।

ঝালকাঠীর কয়েকশ পরিবার বর্ষা মৌসুমে চাক জাল তৈরি করে বাড়তি আয় করছে। অবসর সময়ে নারী ও পুরুষেরা ঘরে বসে চাক জাল তৈরি করেন। একজন প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি জাল তৈরি করতে পারেন।

পোনাবলিয়া গ্রামের দুলাল মুনষি বলেন, প্রতিদিন তারা কৃষিকাজের অবসরে চাক জাল তৈরি করেন। ঘরে বসে নারীরাও চাক জাল তৈরি করেন। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার ঝালকাঠির হাটে জাল নিয়ে যান। বড় চাক জাল ৩০০-৪০০ টাকা এবং ছোট চাক জাল ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। খরচ বাদে প্রতিটিতে ৮০-১০০ টাকা লাভ থাকে।

Chak

চাক জালের আরেক কারিগর শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বাঁশের তৈরি চাঁইয়ের ব্যবহার কমে যাওয়ায় জেলেরা চাক জালের দিকে ঝুঁকেছেন। জাল কিনতে আসা জেলে কামাল হোসেন বলেন, চাক জাল দিয়ে শুধু চিংড়ি মাছ ধরা হয়। বর্ষা মৌসুমে ধানখেতে ও ছোট নালায় প্রচুর চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। চিংড়ি মাছ ধরার জন্য চাক জালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

ভান্ডারিয়া থেকে ঝালকাঠিতে বিক্রি করতে আসা চাক জাল ব্যবসায়ী আব্দুল করিম জানান, বাজার থেকে চিকন সুতার জাল কিনে কেটে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বাঁশের কঞ্চির সাথে বেধে জাল তৈরী করি। শুধু ঝালকাঠি নয়, রাজাপুর, কাঠালিয়া, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ায় এ জালের বেচা-বিক্রি করি। এ দিয়ে সংসার চলে। 

আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস

আরও পড়ুন