ভাগ্নের লাশটাও আনতে পারলাম না
ছবি : মাহবুব আলম
‘প্রথমে মগ (বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভুক্ত গোষ্ঠী বিশেষ) কর্মীরা আগুন দিল। এরপর সেনারা এসে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে আমার গোলাভরা ধান পুড়ে মুহূর্তেই ছাই হয়ে যায়। আগুন লাগানোর পর এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে সেনারা। চোখের সামনেই গুলিতে ভাগ্নে মারা গেল। লাশটাও আনতে পারলাম না। সব রেখে পালিয়ে চলে এলাম।’
ষাটোর্ধ্ব কুইল্লা মিয়ার এখন কিছুই নেই। বুক ভরা হাহাকার নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছেন। গোলাভরা ধান, মাঠ ভরা ফসল ছিল কুইল্লা মিয়ার। সব হারিয়ে এখন পাগলপ্রায়। ছোট একটি পলিথিনের মাঝে ছয় ছেলেমেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে রাত কাটান।
কুইল্লা মিয়ার ঈদ আনন্দ ফিকে হয় ২৫ তারিখের পরই। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মেদী গ্রামের গৃহস্থ পরিবার বলে পরিচিতি ছিল তার। ২০ একর জমিতে ফসল ফলান। ২শ মণ ধান তার ঘরে ছিল এক সপ্তাহ আগেও। জমিতে ছিল সবুজ ধান। এখন সবই অতীত। ভিটে এখন ছাইয়ের ভাগাড়। গরু-ছাগল সব লুট হয়েছে। আবাদের জমি বেদখল। শূন্য হাতে বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
এক কাপড়ে বের হয়ে আসা কুইল্লা মিয়া বেসরকারি সংগঠন এমএসএফ-এর পক্ষ থেকে পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী ঘর বানাচ্ছেন। এখন এই অস্থায়ী ঘরই তার সম্বল।
বলেন, এভাবে সব ফেলে আসতে হবে কখনো ভাবি নাই। বাপ-দাদার ভিটে। মুহূর্তেই পুড়ে ছাই করে দিল। বাপ-দাদার রাষ্ট্র ছিল না। আমাদেরও হল না। ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন কোথায় যাবো?
এএসএস/এআরএস