ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মাটি ফেটে বের হচ্ছে পানি : উৎসুক জনতার ভিড়

প্রকাশিত: ০১:৩১ পিএম, ০৬ জুলাই ২০১৫

ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে খ্যাত নওগাঁর নিয়ামতপুরে মাঠের একটি ছোট টিলা থেকে পানি বের হচ্ছে। আর এ পানি ধারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে অনেকটা বিস্ময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ায় দূর-দূরান্ত থেকে শতশত মানুষ ছুটে আসছে এটা দেখতে।

এদিকে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায় এ ঘটনাকে সৃষ্টিকর্তার আর্শীবাদ মনে করছেন। তারা এটাকে পবিত্র পানি হিসেবে কন্টেইনার বা বোতলে সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আদিবাসীরা এটাকে অলৌকিক দাবি করে পুজা-অর্চনা শুরু করেছেন।

নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের হলুদডাঙা মাঠে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আকস্মিকভাবে একটি ছোট টিলার গা ফেটে পানি বের হওয়া দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় রথীন্দ্রনাথ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় মানুষ দেখেন যে মাঠে টিলার কোল ঘেঁষে একটি জায়গা থেকে পানি বের হচ্ছে। এ খবর আশপাশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় আদিবাসীরা সকাল থেকেই সেখানে পূজা-আচর্না শুরু করেছেন।

তিনি আরো জানান, আগামী এক সপ্তাহ এ এলাকায় কোনো ভারী বৃষ্টিপাত হয় নি। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমেও আশপাশের এলাকায় পানির অভাবে ধান চাষ করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। গরমের সময় এ এলাকার মানুষ চরম পানির সমস্যায় ভোগে। সে কারণে হঠাৎ এ ঘটনাকে স্থানীয় মানুষ সৃষ্টিকর্তার আর্শীবাদ হিসেবেই ধরে নিয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেকেই এ পানি বোতলে ভরে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন। সুপেয় হওয়ায় তা পান করছেন অনেকে।

আরেক আদিবাসী সবুজ কুমার মণ্ডল জানান, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শত শত মানুষ ভিড় করছে। বেশিরভাগ মানুষ হাতে বোতল নিয়ে অপেক্ষা করছেন পানি সংগ্রহ করার জন্য। শনিবার সকাল থেকে সেখানে তিনটি দোকান বসেছে।

স্থানীয়দের আরো কয়েকজন জানান, আশেপাশের ৩ থেকে ৪ কিলোমিটারের মধ্যে নদী, খাড়ির মতো কোনো স্থানীয় পানির উৎস নেই ওই এলাকায়। যে স্থানে এ ঘটনা ঘটেছে তার আশেপাশে গভীর নলকূপ বোরিং করা যায়নি। এ অঞ্চলে পানির স্তর ১২০ থেকে ১৩০ ফিটের মধ্যে।

এ বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিয়ামতপুর উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, সাধারণত যদি বায়ুর চাপ পানির চাপের চেয়ে কম হয় তাহলে এমন ঘটনা ঘটে থাকে।

একই কথা বললেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনি বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। তিনি জানান, এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে ঘটলেও সাধারণত বাংলাদেশে ঘটে না। বায়ুর চাপ যদি পানির চাপের থেকে কমে যায় তাহলে ভূ-গর্ভস্থ পানি বের হয়ে আসতে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত বায়ুর চাপ পানির চাপের চেয়ে বেশি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মাটির নিচ থেকে পানি বের হবে। বরেন্দ্র জনপদের শুষ্ক অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম বলেও জানান তিনি।

এসএস/আরআইপি