সবাই যখন ঘুমায় তখন তারা রাস্তায়
তীব্র শীতে রাত ৯টা বাজতেই সাতক্ষীরা শহরের দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করে। সবাই ফিরে যান নিজ ঘরে। খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন সবাই।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়, রাতের সাতক্ষীরায়। যখন ঘুমন্ত সাতক্ষীরা তখন সাতক্ষীরাকে পাহারা দেন তারা। সাতক্ষীরা শহর পাহারা দেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক।
তবে সাতক্ষীরার রাতের পাহারাদার সিরাজুল ইসলাম ও বাবর আলীর সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। তীব্র শীত উপেক্ষা করে নিজেদের কষ্ট বিসর্জন দিয়ে সাতক্ষীরা শহরবাসীকে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে সাহায্য করেন তারা।
রাতের সাতক্ষীরার পাহারাদার বাবর আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। বড় লোকদের পাহারা দিয়ে তাদের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পড়ে আমাদের মত গরীব মানুষদের। সবাই দোকানপাট বন্ধ করে চলে যায়। সারারাত জেগে পাহারা দিতে হয় আমাদের। কোনো দোকানপাট চুরি হলো কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। রাত ৯টা থেকে সকাল হওয়া পর্যন্ত থাকে আমাদের দায়িত্ব।
অনেকটা দুঃখের সঙ্গে বাবর আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের মত গরীব মানুষের খবর কেউ রাখে না। যখন ভোটের প্রয়োজন পড়ে তখন আমাদের খবর নেয়। এ শীতে আমরা কিভাবে পাহারার কাজ করছি সেদিকে কারো খেয়াল নেই। আজ পর্যন্ত একটি কম্বল বা শীতের পোশাকের কেউ ব্যবস্থা করেনি। তারপরও আমাদের দায়িত্ব রাতের সাতক্ষীরাকে পাহারা দেয়া। আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাব।
অপর পাহারাদার সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাজ পাহারা দেয়া। আমরা তাই করছি। শীত তীব্র কিন্তু কি করব বলুন। এখান থেকে যে টাকা পাই সে টাকা দিয়েই চলে আমাদের সংসার। এছাড়া দিনের বেলায় বিভিন্ন স্থানে কাজ করে বেড়াই।
শনিবার রাত ১টার দিকে শহরের সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়কের চায়না বাংলা শপিং সেন্টারের সামনে এ দুইজন রাতের পাহারাদারের সঙ্গে কথা হয়।
তবে সাতক্ষীরা শহরের মধ্যে মোট কতজন এমন পাহারাদার রয়েছেন তার কোনো সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি তারা। তারা শহরের মানুষকে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে সাহায্য করেন। নিজেরা নির্ঘুম রাত কাটিয়ে বসে থাকেন।
সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে চুরি-ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে রাতে পুলিশি টহল জোরদার রয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে পাহারাদারদের ব্যবস্থা রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে পুলিশ বাহিনী তৎপর রয়েছে।
আকরামুল ইসলাম/এএম/জেআইএম