ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

টানা বর্ষণে গদখালীর ফুল চাষিদের মাথায় হাত

প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, ২০ জুলাই ২০১৫

টানা বর্ষণে যশোরের গদখালীর সাড়ে চার হাজার ফুল চাষিরা চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাছেন। অব্যাহত বর্ষণে গদখালীর অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ফুল ক্ষেতেও ধরছে পচন। কমেছে ফুলের দাম। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের ফুল চাষিরা।

সারাদেশে ঈদ উৎসবে যে ফুল বেচাকেনা হয় তার ৭৫ ভাগই যশোরে উৎপাদিত হয়। তবে এবার অতি বৃষ্টির কারণে ঝরে গেছে ফুলের পাঁপড়ি। তাই গদখালী ফুলের আড়তে দেখা নেই পাইকারদের।  

Benapol

স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানায়, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী এলাকার বিস্তৃর্ণ অঞ্চল জুড়ে ফুল চাষ হয়ে থাকে। এই অঞ্চলের কৃষকরা বছরে অর্ধশত কোটি টাকার ফুল উৎপাদন করে সারাদেশে সরবরাহ করে থাকেন। ফুল চাষ লাভজনক পেশায় পরিণত হওয়ায় গত কয়েক দশক ধরেই এই এলাকার কৃষকরা এ পেশার উপর নির্ভরশীল। তবে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ফুল চাষীরা।

গদখালি ফুলচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের আশানুরুপ উৎপাদন হয়েছিল। কিন্ত অতি বর্ষণের কারণে ঝরে গেছে ফুলের পাঁপড়ি, নষ্ট হয়ে গেছে অনেক গাছ।

আগে প্রতিদিন ত্রিশ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হলেও এখন দিনে এক লাখ টাকারও হয় না। তাই ভেঙে যেতে বসেছে জেলার সাড়ে চার হাজার চাষির স্বপ্ন।

স্থানীয় পুটাপাড়া গ্রামের চাষি আবুল কাশেম বলেন, প্রতি বিঘা জমি বছরে ১২ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে চার বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছেন। তার প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে, এখন একদিন পরপর ওই ফুল তুলতে হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ফুলের পাঁপড়ি ঝরে যাওয়ায় ওই ফুল বিক্রি হচ্ছে না।

আবুল কাশেম বলেন, পরের জমি লিজ নিয়ে ফুলের আবাদ করেছি। ঈদের সময় ফুল বিক্রির যে টার্গেট নিয়েছিলাম তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের পথে বসতে হবে।

ঝিকরগাছার আজমপুর গ্রামের ফুলচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী ফুলের জোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়, অথচ এখন লাখ লাখ ফুল ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। বেচাবিক্রি নেই। তাই খরচের টাকাই ঘরে তোলা দায়।

Benapol

গদখালি বাজারের ফুল ব্যবসায়ী আতর আলি বলেন, বাজারে ফুলের চাহিদা থাকলেও ফুলের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় খরিদদার পাওয়া যাচ্ছে না।

ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো ফুল চাষিরা সরবরাহ করতে পাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কম দামে ফুল কেনার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিরক কুমার সরকার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের উৎপাদনও হয়েছে বেশি। এবারের বাজারে চাষিরা এক বিঘা জমি থেকে গড়ে ৬০/৭০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছিলেন। কিন্তু অতি বৃষ্টিতে ফুলের গুণগত মান নষ্ট হওয়ায় তারা হতাশ।

জামাল হোসেন/এআরএ/এমআরআই