যশোরে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ভবন নির্মাণ
যশোর উপশহর এলাকার ১৩৬নং শহীদ স্মরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। হাউজিং এস্টেট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে।
অবিলম্বে বিদ্যালয়ের জমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে সোমবার মানববন্ধন করেছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে।
বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেন দোদুল, শিক্ষা বোর্ডের সাবেক উপ-সচিব মোহাম্মদ আবদুল খালেক, রকিব মোস্তফা, সুখেন মজুমদার, নিয়ামতউল্লাহ, উপ-শহর ইউনিয়নের মেম্বার মসিয়ার রহমান মিনু, হাসান জহির ও পারভীন আক্তার প্রমুখ।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেন দোদুল অভিযোগ করেন, এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় ১৯৭০ সালে যশোর হাউজিং এস্টেট ৭নং সেক্টরের ১ থেকে ১৮ নং প্লটের ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরের বছর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় শহীদ স্মরণী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ১ ও ২নং প্লটে ভবন নির্মাণ করা হয়।
১৯৯৭ সালে বিদ্যালয়ের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা ৩ ও ৪নং প্লটে তিনতলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর আগের ভবনটি ভেঙে ১ ও ২নং প্লটকে দৈনিক সমাবেশ ও শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া মাঠটিকে ঈদগাঁ, জানাজার নামাজ পড়াসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু জমিটি ব্যবহার করলেও তার মালিকানা হাউজিং এস্টেট বিদ্যালয়টিকে কখনো দেয়নি।
একাধিকবার আবেদন করার পরেও উল্টো ১৯৭৮ সালে ১নং প্লট ও ১৯৭৯ সালে ২নং প্লট অন্যত্র বিক্রি করে দেয় যশোর হাউজিং এস্টেট। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালে হাউজিং এস্টেটের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যশোর জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে প্লট দুইটি বিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তরের পক্ষে সুপারিশ করেন।
কিন্তু এ ব্যাপারে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি হাউজিং এস্টেটের কর্মকর্তারা। এ জন্য ২০১৩ সালে প্লট দুইটির ক্রয় সূত্রে মালিকরা জমি বুঝে দিতে একবার তৎপরতা চালায়।
তবে স্থানীয়দের প্রতিরোধে তখন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি তারা। সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রয়ারি তারা আদালতের আদেশ নিয়ে পুলিশের সহায়তায় হাউজিং কর্তৃপক্ষ জমিটির কথিত দাবিদার এনামুল হক গংকে বুঝিয়ে দিয়েছে।
ইতোমধ্যে সেখানে নির্মাণকাজও শুরু করা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও দৈনিক সমাবেশ বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে বিদ্যালয়ের এই জমি ফিরিয়ে দেয়া হোক।
মিলন রহমান/এএম/এমএস