ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জয়পুরহাটে শিশুসহ সাড়ে ৩ শতাধিক বৃদ্ধ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত

জেলা প্রতিনিধি | জয়পুরহাট | প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আবহাওয়া জনিত কারণে জয়পুরহাটে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। কেবল আধুনিক জেলা হাসপাতালেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৩ শতাধিক ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই শিশু বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রতিদিনই জেলা সদরের আধুনিক হাসপাতালে ৬-৭ জন রোগী ভর্তি হওয়াসহ ২৫ থেকে ৩০ জন আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক রোগীরা চিকিৎসা নিতে ছুটে আসছেন ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা নিতে।

রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। এসব শিশু ও বয়স্ক রোগীদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে জায়গা দিয়ে তাদের চিকিৎসা সেবা রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের।

জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত কিছুটা আরামদায়ক উষ্ণতা থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবারও চিরচেনা শীতের ধকল। আর এমন শীতজনিত কারণে জয়পুরহাটে বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। কেবল মাত্র জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে গত এক সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে সাড়ে ৩ শতাধিক। এ সব রোগীদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই শিশু আর অবশিষ্ট প্রায় সকলেই বৃদ্ধ।

শিশু আহসান হাবিরের মা সদর উপজেলার পালি গ্রামের বন্যা, শিশু আবদুল্ল্যার মা বড় তাজপুর গ্রামের মৌসূমি, শিশু নেহা’র মা কালাই উপজেলার সরাইল গ্রামের ববি আক্তার, রাহির বাবা পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জি গ্রামের শহিদুল ইসলামসহ অনেক ডায়রিয়া আক্রান্ত মাসহ অভিভাবকরা জানান, তাদের শিশুদের বেশ কয়েক বার পাতলা-পায়খানার সঙ্গে বমি হলে বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েও কোনো উপকার না হলে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো পর তাদের শিশুরা বেশ সুস্থ বোধ করছে। লোকবল কম থাকলেও চিকিৎসা সেবায় সন্তুষ্ট হয়েছেন বলেও জানান তারা।

Joypurhat-Diariah

অন্য দিকে এ নিয়ে বিড়ম্বনার কথাও জানান অনেকেই। ডায়রিয়ার জন্য শুধু জেলা আধুনিক হাসপাতালে আলাদা ২৫ শয্যা থাকলেও গড়ে প্রতিদিন সেখানে রোগী ভর্তি হচ্ছেন ৪৫ জন রোগী। ফলে হাসপাতালে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় অধিকাংশ রোগীকে মেঝেতেই নিতে হচ্ছে চিকিৎসা। এ ছাড়া ডায়রিয়ার প্রয়োজনীয় সকল ওষুধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে বেশ কিছু রোগী ও তাদের অভিভাবকের।

পাঁবিবি উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের বৃদ্ধা রোগী খালেদা বেগম জাানান, আমি মেঝেতেই ছিলাম। তিনদিন পর কেবল মাত্র বেডে উঠতে পারলাম বাবা। অনেকে এখনও মেঝেই আছে কষ্ট করে।

একই উপজেলার শিশু রোগী আদনানসহ বেশ কয়েকজন ডায়রিয়া রোগী জানান, চিকিৎসা বলতে তারা শুধু খাবার স্যালাইন আর জ্বরের ওষুধ হাসপাতাল থেকে পাচ্ছেন, আর বাকিগুলো চিকিৎসকরা লিখে দিচ্ছেন। সেগুলো বাজার থেকে কিনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।

মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে বিগত প্রায় ১ মাস যাবৎ কিছু কিছু ডায়রিয়া রোগী হয়েছিলেন, আর গত এক সপ্তাহ ধরে এ বিপুল সংখ্যক রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে আমরা মনে করছি রাতের শীত আর দিনের গরম আবহাওয়ার তারতম্য। এরুপ অবস্থায় ঠাণ্ডা যেন না লাগে, টাটকা খাবার খাওয়াতে হবে, সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, এর ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ কম হবে। হাসপাতালে আমাদের চিকিৎসক সংকট রয়েছে, এখানে ৪৩ জন চিকৎসকের বিপরীতে মাত্র ২৩ জন কর্মরত আছেন, জনবল সংকট রয়েছে, এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।

রাশেদুজ্জামান/এমএএস/পিআর