ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৫শ বছরের গাছটি বাঁচাতে জীবন দিতে রাজি গ্রামবাসী

জেলা প্রতিনিধি | ঝিনাইদহ | প্রকাশিত: ১০:২২ পিএম, ২৫ জুন ২০২০

তেঁতুল গাছটির বয়স ৫০০ বছর হবে।আম্ফান ঝড়ে গাছটির একটি ছোট ডালও ভেঙে পড়েনি।গাছে কোনো শুকনো ডালও নেই। এ গাছের ডাল ভেঙে পড়ে কোনো ব্যক্তির হতাহতের ঘটনাও আজ পর্যন্ত ঘটেনি। কিন্তু এরই মাঝে গাছটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে কাটার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ গাছের জন্য আমরা গ্রামবাসী জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। এভাবেই বলছিলেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল মান্নান (৬০)।

তিনি জানান, উজেলার বালিয়াডাঙ্গা বাজারের এ তেঁতুল গাছটি আমাদের ঐতিহ্য। বাজারের সবকিছু এ গাছকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। গাছের তলায় সপ্তাহে দুইদিন বাজার বসে। এছাড়াও প্রচণ্ড রোদের মধ্যে এ গাছটি আমাদের ছায়া দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। এ গাছের নিচেই অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে অনেকে দোকানদারি করছে।এ গাছের দ্বারা কোনোদিন কারও ক্ষতি হয়নি।

গত ২২ জুন ৫০০ বছরের তেঁতুল গাছটিকে বিপজ্জনক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখিয়ে গাছটি কাটার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছেন ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ৭নং ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও ৮নং ইউপি সদস্য কে.এম শামছুল হক। সেখানে গ্রামবাসীর পক্ষে অনেকেই স্বাক্ষর করেছেন। আর এ আবেদনপত্রে জোর সুপারিশ করেছেন উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সানা।

বালিয়াডাঙ্গা বাজারের গাছটির নিচে কথা হয় প্রায় ৩০ জন ব্যক্তির সাথে। তারা জানায়, বাজারের হাট-চান্দি নির্মাণের জন্য আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। গাছ কাটার ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। এ গাছটি আমাদের ঐতিহ্য। তারা সকলেই গাছটি না কাটার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেন এবং গাছটি না কাটার ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জমা দেবেন বলে জানান।

বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পল্লী চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকুর রহমান (৬৫) জানান, গ্রামবাসী ও বাজারের শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ গাছটি না কাটার পক্ষে। এ গাছের দ্বারা কেউ কখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। গাছ কেটে হাট-চান্দি নির্মাণ না করে বাজারের পাশে অনেক সরকারি জমিতে দোকান আছে সেগুলো উচ্ছেদ করলেই বড় হাট-চান্দি নির্মাণ করা সম্ভব হবে। এজন্য ৫০০ বছরের গাছটি কাটার দরকার নেই।

সুলতান আহমেদ নামের এক যুবক জানান, এ গাছটি বাজারের ঐতিহ্য। ৫০০ বছরের গাছটি বাঁচাতে জীবন দিতে রাজি আছি।তিনি গাছ না কাটার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।

৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সানা জাগো নিউজকে বলেন, বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পুরাতন তেঁতুল গাছটি কাটার ব্যাপারে একটি দরখাস্ত ইউএনওকে দেয়া হয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা জাগো নিউজকে বলেন, বালিয়াডাঙ্গা বাজারের গাছটি কাটার ব্যাপারে এখনও কোনো আবেদন পাননি।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এমএএস/এমকেএইচ