ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঝালকাঠিতে খাদ্যবান্ধব সহায়তায় নিম্নবিত্তদের মুখে হাসি

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ২১ মার্চ ২০২১

‘ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সরকারের খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে সারাদেশে নিম্নবিত্ত, গরীব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের জন্য খোলা বাজারে ডিলারদের মাধ্যমে চাল ও আটা বিক্রি চালু রয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল-আটার চাহিদা মেটাচ্ছে পরিবারগুলো।

ঝালকাঠি পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে ওএমএস-এর মাধ্যমে খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে চাল ও আটা। এ সব চাল ও আটা কিনতে প্রতিদিনই ডিলারদের দোকানের সামনে থাকে উপচে পড়া মেহনতি জনতার ভিড় লক্ষ করা যায়। এর মাধ্যমে সরকার যেমন বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে অপরদিকে সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি হচ্ছে।

খাদ্য অধিদফতরের মাধ্যমে সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চালু রয়েছে বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি। এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে একজন ক্রেতা (কার্ড ধারী) সর্বোচ্চ ৩০ কেজি উন্নতমানের ফ্রেশ চাল (ধান, চিটা, খুদ, পাথর ছাড়া) ক্রয় করতে পারছেন নির্ধারিত ডিলারের কাছ থেকে। এই ৩০ কেজি চালের দাম পড়ছে মাত্র ৩০০ টাকা। অর্থাৎ বিশেষ এই কর্মসূচিতে ১০ টাকা দরে প্রতি কেজি চাল পাচ্ছেন মানুষ।

চাল ও আটার গুণগত মানের দিক থেকে অনেকটাই ভালো ও মানসম্মত বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। শহরের চাঁদকাঠি এলাকার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, করোনার এই দুঃসময়ে ৩০ টাকা দরে চাল কিনতে পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত ভালোভাবে খেতে পারছেন। অন্যথায় বাজার থেকে ৫০ টাকা দরে কেজি চাল কিনে আধা-বেলা খেয়ে সময় পার করতে হতো।

বাসস্ট্যান্ড এলাকার মমতাজ বেগম প্রতি কেজি আটা ১৮ টাকা দরে কিনতে পেরে জানান, এখানে (খোলা বাজারে) আটা কিনতে না পারলে বাইরে থেকে দ্বিগুণ দামে কিনতে হত। পাঁচজনের সংসারে এত দাম দিয়ে আটা কিনে সকালে রুটি খাওয়া সম্ভব হতো না। করোনা মহামারিতে গরীব মানুষের স্বার্থে গ্রহণ করা প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগকে কৃতজ্ঞতা জানান দরিদ্র ক্রেতারা।

ঝালকাঠি খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতবছরের অক্টোবর মাস থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হয়। ডিসেম্বর মাসে চাল বিক্রি বন্ধ থাকলেও ১৮ টাকা দরে আটা বিক্রি হয়েছে সবসময়ই। প্রতি মাসে ওএমএস’র চালের মাধ্যমে অর্ধলাখ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ হাজার ৭৬৪টি পরিবারের জন্য ডিলারের মাধ্যমে ৬৩টি বিক্রয় কেন্দ্র হতে পাঁচ মাস বিক্রি করা হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত বছরে এক মাস অতিরিক্ত সরবরাহ করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এ তিনমাসে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ১৭০ কেজি চাল বিক্রি করা হয়েছে। স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর জন্মের এ মাসে এ কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে, যা এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলবে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে চলতি মাস পর্যন্ত বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পুরাতন জাল কার্ডধারীদের বাদ দিয়ে ৪ হাজার ৪০০ নতুন কার্ড উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

jagonews24

কিফাইতনগর এলাকার ডিলার মো. নাসির উদ্দিন জানান, ওএমএস’র চাল ও আটা কিনতে সকাল হলেই ক্রেতারা লাইনে দাঁড়িয়ে যান। অল্প মূল্যে ভালোমানের চাল-আটা কিনতে মানুষের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। ৩০ টাকায় চাল ও ১৮ টাকায় আটা ক্রয় করা ক্রেতাদের বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। পণ্যের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি থাকলেও প্রতিজনকে ৫ কেজির বেশি কোনো পণ্য দেয়া হচ্ছে না।

ঝালকাঠি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর হোসেন বলেন, দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ১০টাকা কেজি দরে চাল এবং খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রির কার্যক্রম সরকার খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে পরিচালনা করে থাকে। এক্ষেত্রে সরকারি নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্ছ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রোগ্রামগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে। বিক্রি কার্যক্রমে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে তদারকি কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। কোনো ডিলারের অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়।

নলছিটি সুগন্ধা অটো রাইস মিলের মালিক মো. জিল্লুর রহমান জানান, গত বোরো মৌসুমে জেলা খাদ্য বিভাগের গাফিলতির কারণে চাল সরবরাহ করতে পারিনি। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাইরের বাজারে মূল্য বেশি থাকা সত্ত্বেও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অনুরোধে চুক্তি অনুযায়ী ৫০৫ মেট্রিকটন চাল সরবরাহ করেছি।

মো. আতিকুর রহমান/এআরএ/এমকেএইচ