একে একে মৃত্যু : পরপর তিন বোনকে বিয়ে
সবুরা খাতুন, রাশেদা সর্বশেষ খাদিজা এই তিন বোনকেই একে একে বিয়ে করেন ফেনীর আবদুল হক চৌধুরী। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার বোনকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যু হলে আরেক বোনকে বিয়ে করেন। এভাবেই পর্যায়ক্রমে তিন বোনকে বিয়ে করেন। প্রতিটি বিয়েই তিনি করেছেন পারিবারিক সিদ্ধান্তে। প্রতিটি বিয়ের পেছনে আছে একটি বিয়োগান্তক অধ্যায়, সন্তানদের ভালো রাখার নিরন্তর চেষ্টা।
আবদুল হক চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ফেনীর সাউথ অফিসের ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তিনি উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের গুনক গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল হক চৌধুরী ১৯৯৫ সালে ১৪ ডিসেম্বর একই ইউনিয়নের বাদুরিয়া গ্রামের সেকান্তর বাদশার বড় মেয়ে সবুরা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। ১৯ বছর সংসার শেষে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সবুরা। কয়েক মাস পার হলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে সবুরার ছোট বোন রাশেদাকে বিয়ে করেন আবদুল হক চৌধুরী। এ সংসারে একটি কন্যাসন্তান হয়। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! ছয় বছর সংসার করার পর রাশেদাও অসুস্থ হয়ে মারা যান।
পরপর দুই স্ত্রীর মৃত্যুতে আবদুল হক চৌধুরী ও তার শ্বশুরের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। দুই স্ত্রী হারিয়ে তিন এতিম মেয়ে নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটে আবদুল হকের।
মা-খালার মৃত্যুতে শোকে কাতর মেয়েরা অবস্থান করে নানাবাড়িতে। অন্যদিকে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় সংসার ভেঙে যায় আবদুল হক চৌধুরীর মেজ শ্যালিকা খাদিজার।
একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে এতিম মেয়েদের কথা চিন্তা করে খাদিজাকে বিয়ে করতে সম্মত হন আবদুল হক। সে অনুযায়ী গত মাসে সামাজিকভাবে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয়।
আবদুল হকের শ্যালক ইলিয়াস সুমন জাগো নিউজকে বলেন, ‘হক ভাই ভালো মানুষ। একে একে দুই স্ত্রী মারা যাওয়ার পরও মানবিক কারণে তার কাছে তৃতীয় বোনকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে করে তার সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে।’
স্থানীয় বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন বলেন, ‘আবদুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যুর পর উভয় পরিবারেরই সম্মতিক্রমে সামাজিকভাবে তৃতীয় বোনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’
আবদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে কঠিন থেকে কঠিনতম পরীক্ষা করছে। পরপর দুই স্ত্রীকে হারিয়ে এতিম মেয়েদের নিয়ে কঠিন সময় পার করছি। আল্লাহর রহমত, মা-বাবা ও এলাকাবাসীর দোয়া এবং দুর্দিনে শ্বশুর পরিবারের লোকজন আমার পাশে থাকায় আমার মতো লোক এখনো টিকে আছি।’
নুর উল্লাহ কায়সার/এসআর/এএসএম
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ৫ জনকে ঠেলে দিলো বিএসএফ
- ২ তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে নির্বাচনের গতি-মাত্রা বেড়েছে
- ৩ খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র হাতে পেলো বগুড়ার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি
- ৪ বিএনপি সবসময় কোরআন সুন্নাহর পক্ষে ছিল ও আছে: মির্জা ফখরুল
- ৫ বিএনপি নেতাকর্মীদের অবরোধ, তৃতীয় দফায় ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন বন্ধ