ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না রহিমার

জেলা প্রতিনিধি | মৌলভীবাজারের | প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২১

স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন গৃহবধূ রহিমা বেগম (২০)। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।

অভিযোগ উঠেছে, বাবার বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় রহিমার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন তার স্বামী। এতে রহিমার হাত-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার (৪ জুলাই) সকালে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযুক্ত রহিমার স্বামী শিপন আহমদকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে শিপন আহমদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রহিমার সঙ্গে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের ঝগড়া হতো। এতে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনরা রহিমাকে নির্যাতন করত। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার সমাধান করে দিলেও লাভ হয়নি। এরপরও তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত।

এদিকে স্বামী ও তার স্বজনদের নির্যাতন সইতে না পেরে সাত মাস আগে এক সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি হরিপুর গ্রামে চলে আসেন রহিমা। সন্তানকে দেখার সুযোগে প্রায় শ্বশুর বাড়িতে আসতেন রহিমার স্বামী শিপন আহমদ।

jagonews24

শনিবার (৩ জুলাই) শিপন সন্তানকে দেখতে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। রাতে সেখানে ঘুমান তিনি। কিন্তু ভোর পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী রহিমার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন শিপন। ঘটনার পরই তিনি পালিয়ে যান।

রহিমার চিৎকার শুনে স্বজনরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিপনকে গ্রেফতার অভিযানে নামে পুলিশ। রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পশ্চিম হাতলিয়া এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহেদুল ইসলাম সুমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘রহিমা বেগমকে তার স্বামী শিপন আহমদ পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছেন। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. মো ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে রহিমা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার হাত-মুখসহ শরীরের ৬৩ শতাংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার রোববার বিকেলে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পেট্রল ঢেলে রহিমাকে তার স্বামী পুড়িয়েছে রহিমার বাবা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।’

আব্দুল আজিজ/জেডএইচ/জিকেএস