ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

স্কুল আঙিনায় চলছে নৌকা

জেলা প্রতিনিধি | মানিকগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৩:৫৭ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রায় দেড় বছর পর খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে সরাদেশেই চলছে উৎসাহ উদ্দীপনা, নানান প্রস্ততি। কিন্তু বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ঘোষিত সময়ে স্কুলে পাঠদান নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে মানিকগঞ্জের দেড় শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফলে শিক্ষক, অভিভাবক আর শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। পানি না কমা পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফেরানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বন্যার পানি উঠেছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বেলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সরেজমিন দেখা যায়, স্কুল আঙিনায় নৌকা চলছে। পুরো প্রাঙ্গণ জুড়েই কচুরিপানা আর ময়লা-আর্বজনা। টিউবওয়েল ও টয়লেটও তলিয়ে গেছে পানিতে।

jagonews24

পাশ্ববর্তী ঘিওর উপজেলার গোয়ালজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো কোমর সমান পানি। তলিয়ে আছে চারপাশের রাস্তা-ঘাট। প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম নিজে নৌকা চালিয়ে ঘুরিয়ে দেখান স্কুলের চারপাশ।

তিনি জানান, ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খুলতে প্রস্ততি রয়েছে। তবে চারপাশে পানি থাকায় নৌকা ছাড়া স্কুলে আসা যায় না। এ অবস্থায় অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহও দেখাচ্ছেন না। স্কুলের ছবি তুলে কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেভাবেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

jagonews24

স্কুলের আশপাশের কয়েকজন অভিভাবক জানান, প্রায় দেড় বছর পর স্কুল খুলছে-এতে আমরা খুবই খুশি। কিন্তু পানির মধ্যে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছি না। কারণ এর মধ্যে গেলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই পানি না যাওয়া পর্যন্ত বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো সম্ভব নয়।

শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের বর্ধ্বমানকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে ওঠেছিল বন্যার পানি। বর্তমানে ক্লাস রুম থেকে পানি নামলেও তলিয়ে আছে বিদ্যালয়ে অঙিনা। টয়লেটে যেতেও হাঁটুপানি।

jagonews24

বিদ্যালয়ের সহাকারী শিক্ষক মোছা. মৌসুমী আক্তার জানান, স্কুল আঙিনাসহ চারপাশে পানি থাকায় ক্লাস নেয়ার মতো পরিবেশ নেই। কারণ এ অবস্থার মধ্যে অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে রাজি হচ্ছেন না। আমরাও বুঝতে পারছি এ পরিস্থিতে ছোট ছোট বাচ্চাদের নানা ঝুঁকি রয়েছে।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাত উপজেলায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫২। এরমধ্যে ১১৯ বিদ্যালয়ের মাঠ, ২৫ বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম বন্যার পানিতে ডুবে যায়। এছাড়া ১৯ বিদ্যালয়ে বানভাসীরা আশ্রয় নেওয়ায় আপাতত খোলা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া পাঁচ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণী কক্ষে বন্যার পানি রয়েছে।

jagonews24

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী জাগো নিউজকে জানান, যেসব স্কুলের ক্লাস রুমে পানি উঠেনি সেসব স্কুলে পাঠদান শুরু করতে পারবো। যেগুলোতে পানি রয়েছে সেগুলোর আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে আপাতত ক্লাস চালানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ক্লাস বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের কিছুটা অসুবিধাতো হবেই। তবে পানি নেমে যাওয়ার পর পুরোদমে স্কুল চালুর পর ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হবে।

বি এম খোরশেদ/এএইচ/এএসএম