দুই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনা: ডিসি অফিসের ৪ কর্মচারীকে ওএসডি
নড়াইলমুক্ত দিবসের অনুষ্ঠানে দুই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ের চার কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়েছে।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সঙ্গে যৌথ সভায় জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওএসডি হওয়া কর্মচারীরা হলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির এনামুল ইসলাম, সহকারী নাজির বাবর আলী, সার্কিট হাউজে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. মনিরুজ্জমান এবং ওমর ফারুক।
জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত দেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে পরে কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানানো হয়।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বিগত কমিটির জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম কবির, জেলা ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এস এ মতিন, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার অ্যাডভোকেট শরীফ হুমায়ুন কবির, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হাই বিশ্বাস, নড়াইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকু, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের প্রকৌশলী খসরুল আলম পলাশ প্রমুখ।
১০ ডিসেম্বর নড়াইলমুক্ত দিবস অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিসি অফিসের কর্মচারী বাবর আলী ও এনামুলের নেতৃত্বে ১০-১২ জন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এসএ মতিন ও মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলুকে চেয়ার দিয়ে মারতে যান এবং গালাগাল করেন। এ সময় পেশাগত কাজের জন্য ভিডিও ধারণের সময় এসএটিভির জেলা প্রতিনিধি আবদুস সাত্তারের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ১১ ডিসেম্বর দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আয়োজনে নড়াইল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক প্রতিবাদ সভা শেষে নড়াইল-যশোর সড়ক ১৫ মিনিটের জন্য অবরোধ করা হয়। এ সময় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মচারীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা না হলে জেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করে পৃথকভাবে বিজয় দিবস
পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এদিকে, সাংবাদিক আবদুস সাত্তারকে লাঞ্ছনা ও তার মোবাইল কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় নড়াইল প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গে জড়িত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হাফিজুল নিলু/এসজে/জিকেএস