ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পর্যটকের পদচারণায় মুখর রাঙ্গামাটি

জেলা প্রতিনিধি | রাঙ্গামাটি | প্রকাশিত: ০৭:৩৪ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১

পর্যটকের পদভারে এখন মুখরিত পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি। বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা তিনদিনের ছুটিতে যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি দূর করতে প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসেছেন পর্যটকরা।

শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, রাঙ্গামাটি পার্ক, শহীদ মিনার, ডিসি বাংলো, আরণ্যক হলিডে রিসোর্টসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, লোকে লোকারণ্য পর্যটন স্পটগুলো। ছুটির দিন হওয়াতে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। পর্যটকদের বিষয়টি মাথায় রেখে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটক সেলিম রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন কোথাও ঘুরতে যেতে পারিনি। টানা তিনদিন ছুটি পাওয়াতে পরিবার-পরিজন নিয়ে রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসেছি। তবে এত বেশি পর্যটকদের ভিড় থাকবে সেটা ধারণা করতে পারিনি। তবে রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য দেখার পর অন্যান্য অসুবিধাগুলোর কথা ভুলে গেছি।’

jagonews24

চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক সুজন দেব বর্মন বলেন, গ্রামের অনেকগুলো পরিবার মিলে এক বাস মানুষ এসেছি রাঙ্গামাটি ভ্রমণে। তবে আবাসিক হোটেলগুলোতে সিট পেতে আমাদের অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। আমরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন হোটেলে রুম বুকিং নিয়েছি।

রাঙ্গামাটি শহরকে আরও পর্যটনবান্ধব করতে আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ জরুরি বলে জানান তিনি।

jagonews24

পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে এবং বিভিন্ন স্থানে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা থাকায় রাস্তাঘাটে যানজট লক্ষ্য করা গেছে। পর্যটকবাহী বাস, মাইক্রোসহ যানবাহনগুলো পার্কিং করার জায়গা না পাওয়াতে সড়কের পাশেই পার্ক করে রাখা হয়েছে। এতে পর্যটনকেন্দ্রগুলোর আশপাশের সড়কে তৈরি হয়েছে যানজট।

পর্যটকদের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ। পাহাড়ঘেরা হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ছোট-বড় বোট ভাড়া করে ভ্রমণে বের হচ্ছেন তারা। অনেকের কাপ্তাই হ্রদঘেঁষা স্পটে রাত্রিযাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে।

jagonews24

রাঙ্গামাটি পর্যটন ঘাটের ইজারাদার মো. রমজান আলী বলেন, ‘পর্যটকদের জন্য ট্যুরিস্ট বোট সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও যথাসাধ্য আমরা পর্যটকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

পর্যটকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে শহরের টেক্সটাইল মার্কেটগুলোতেও। পর্যটক আকর্ষণে স্থানীয়ভাবে তৈরি বিভিন্ন পাহাড়ি পোশাক, পণ্য ও খাদ্যসামগ্রীর পসরা সাজিয়েছেন দোকানদাররা।

jagonews24

বুনন টেক্সটাইলের স্বত্বাধিকারী তুলি চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, ‘শীত মৌসুমকে মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন পোশাক, ব্যাগ, আচার ও হাতে তৈরি পণ্য দোকানে তুলেছি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে যথেষ্ট পর্যটক আসছেন এবং বিক্রিও মোটামুটি ভালো।’

‘তিনদিনের টানা বন্ধের কারণে শহরের বেশিরভাগ হোটেলের রুমগুলোর শতভাগ বুকিং অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিল। যারা বুকিং না করে শহরে প্রবেশ করেছেন তাদের রুম পেতে কষ্ট হচ্ছে। রাঙ্গামাটি শহরে ৫৪টি হোটেল রয়েছে যা ১০হাজার পর্যটক ধারণে সক্ষম, কিন্তু ছুটির কারণে পর্যটক সমাগম বেশি হওয়াতে অনেক পর্যটক রুম পাচ্ছেন না। তবে আশা করছি, এই সংকট খুব দ্রুতই কেটে যাবে’, বললেন রাঙ্গামাটি হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন সেলিম।

jagonews24

রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৃজন কান্তি বড়ুয়া জানান, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার প্রচুর পর্যটক এসেছে। হোটেলও বুকিং রয়েছে। শীতের এই সময়টাই পর্যটকরা বেশিরভাগ ঘুরতে বের হয়।

পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট পুলিশ) মো. হাসান ইকবাল জাগো নিউজকে বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি। জেলা পুলিশের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে পর্যটকদের।

শংকর হোড়/এসআর/এএসএম