গৃহবধূকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতুব্বর
মাদারীপুরের রাজৈরে এক গৃহবধূকে প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত রাজৈর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতুব্বর। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সভাপতি মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি রাজৈরসহ ১১ দপ্তরে অভিযোগপত্র করেছেন গৃহবধূর স্বামী।
অভিযোগপত্রে গৃহবধূর স্বামী উল্লেখ করেন, রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামে চাকরির সুবাদে তিনি তার স্ত্রী, ১০ বছরের মেয়ে, বৃদ্ধ বাবা ও মাকে (দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ) নিয়ে রাজৈর বেপারীপাড়া হাজি সিদ্দিক বেপারীর বাসায় ভাড়া থাকেন। একই ফ্লাটে পাশাপাশি ভাড়া থাকেন রাজৈর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতুব্বর। তিনি পরিবারের লোকজনকে বাসায় রেখে দূরে থাকার কারণে তার স্ত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতে থাকেন শিক্ষক নুর আলম।
এতে আরও বলা হয়, নুর আলম তার মেয়েকে ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি করার কথা বলে প্রাইভেট পড়াতে শুরু করেন। প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে তার স্ত্রীকে অনৈতিক কার্যকলাপ করার প্রস্তাব দেন। এতে তার স্ত্রী বাধা দিলে নুর আলম ভয়ভীতি দেখান। এক পর্যায়ে তার স্ত্রীকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন। ভুক্তভোগী লোকলজ্জার ভয়ে এবং নিজের মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে এতদিন চুপ থাকেন।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রী এ ঘটনা বারবার নুর আলমের স্ত্রীকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। অবশেষে আমাকে জানাতে বাধ্য হয়। পরে আমি এ বিষয় নুর আলমকে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি বাধ্য হয়ে বাসা পরিবর্তন করে থানার মোড়ে বাসা ভাড়া নিয়ে চলে যাই। সেখানেও সে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে বাধ্য হয়ে আমার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি শাখারপাড় চলে যাই। আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতুব্বর বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তাদের (ভুক্তভোগীর পরিবার) সঙ্গে মীমাংসার কথা চলছে।’
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, আমার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির নামে ডাকে পাঠানো অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি।
রাজৈর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, ‘জেলা প্রশাসক বরাবর লেখা অভিযোগপত্রটি হাতে এসেছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, ‘সত্য না হলে কেউ নিজের স্ত্রী সম্পর্কে এ ধরনের অভিযাগ পাঠাতে পারেন না।’
এ কে এম নাসিরুল হক/এসআর/এএসএম