হাতি থেকে বাঁচতে মানুষের লড়াই, চায় স্থায়ী সমাধান
সুনামগঞ্জ সীমান্তে হাতি আতঙ্কে দিন কাটে মানুষের
সীমান্তবর্তী এলাকা সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়ন। এখানে বড় সমস্যা বন্য হাতি। এসব হাতি লোকালয়ে এসে নষ্ট করছে ফসল, ভাঙছে ঘরবাড়ি। এমনকি হাতির হামলায় আহতও হয়েছে মানুষ। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এ অঞ্চলের লোকজন। কিন্তু হাতির সঙ্গে লড়াই বন্ধে স্থায়ী কোনো সমাধান এখনো মেলেনি।
সবশেষ রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) খাবারের সন্ধানে ভারত সীমান্ত থেকে যাদুকাটা নদী পার হয়ে বাংলাদেশে লোকালয়ে নেমে আসে আটটির মতো হাতি।
সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি হাতির পাল খাবারের সন্ধানে সীমান্তের বড়গোপ টিলা থেকে মাহারাম টিলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা চষে বেড়াচ্ছে। ফেলে বেকায়দায় পড়েছেন সীমান্ত এলাকার পাঁচশতাধিক মানুষ।
লোকালয়ে নেমে আসে আটটি হাতি
স্থানীয়রা জানান, হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে তারা মশাল জ্বালিয়ে রাত পার করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে হাতির সঙ্গে সীমান্তের মানুষের এ লড়াই বন্ধে স্থায়ী কোনো সমাধান আজ পর্যন্ত হয়নি বলে জানান তারা।
খোজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে একইভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে তাহিরপুরের বড়গোপ টিলায় অবস্থান নিয়েছিল চারটি বন্যহাতি। তখন আমন ধানসহ ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি করে তিনজনকে আহত করে চলে যায়। ফলে বড়গোপ টিলা, মাহারাম টিলা, আনন্দপুর, গুচ্ছগ্রাম, আদর্শ গ্রামের পাঁচশতাধিক মানুষ হাতির আতঙ্কে দিন পার করে।
স্থানীয় বড়গোপ টিলার বাসিন্দা আজিজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, হাতির দল গাছ ভাঙচুর করে ফসলের ক্ষতি করে। আমরা হাতির কাছে পুরো অসহায়। সরকারের কাছে জোর দাবি, হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষায় স্থায়ী সমাধানের।

স্থানীয় বড়গোপ টিলার বাসিন্দা মো. সজিব হাসান জাগো নিউজকে বলেন, হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে রাতে আমরা মশাল জ্বালাবো।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবীর জাগো নিউজকে বলেন, হাতিগুলোকে যাতে কেউ বিরক্ত না করে সে জন্য মাইকিং করে স্থানীয়দের সর্তক করা হচ্ছে।
বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের বন্য হাতিগুলো বড়গোপ টিলা এলাকায় ঢুকে পড়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বন বিভাগকে জানানো হয়েছে। বিজিবি সীমান্তের লোকজনকে নিরাপদে থাকার জন্য অনুরোধ করছে ও হাতিগুলোকে সরিয়ে দিতে বন বিভাগের লোকজনকে সহযোগিতা করছে।
তাহিরপুর বন বিভাগের মাঠকর্মী অকীল তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা হাতি আসার খবর শুনে সকাল থেকে বড়গোপ টিলায় অবস্থান করছি। বড়গোপ টিলা ও মাহারাম টিলায় আশপাশের সব গ্রামে মাইকিং চালিয়ে মানুষকে সচেতন করছি। হাতিকে কীভাবে তাদের স্থানে পাঠানো যায় সেই লক্ষে কাজ করছি।
লিপসন আহমেদ/জেডএইচ/