ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

শারীরিক প্রতিবন্ধী স্ত্রীর সঙ্গে সোহেলের ১৪ বছরের সুখের সংসার

জেলা প্রতিনিধি | ময়মনসিংহ | প্রকাশিত: ০৫:২২ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

১০ টাকার একটি নোটে দেওয়া ছিল মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে মিসড কল। অপরপ্রান্ত থেকেও আসে মিসড কল। এভাবেই কথার শুরু। কথার সূত্র ধরেই অজান্তে মন দেওয়া-নেওয়া। এরপর বিয়ে। কেটে গেছে সংসার জীবনের ১৪টি বছর।

স্ত্রী শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও তাকে নিয়ে সুখের দাম্পত্যজীবন অতিবাহিত করছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া। স্ত্রী রওশন আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার গুজিয়াম টানপাড়া গ্রামে। তাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ এলাকাবাসী।

jagonews24

সোহেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেছেন। এখন ছোট্ট মাটির ঘর আর একটি টং দোকানই সম্বল এ দম্পতির। তবে শত কষ্টের মধ্যেও তারা অনেক সুখী।

জন্ম থেকেই দুই পা অচল রওশনের। নিজের পায়ে ভর দিয়ে চলার শক্তি নেই। কখনো ছেড়ে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৪ বছর আগে ভালোবেসে তাকে বিয়ে করেন সোহেল। এরপর থেকে স্বামীর পিঠে চড়েই চলাফেরা করেন রওশন আক্তার। হয়েছেন সন্তানের মা।

jagonews24

রওশন আক্তার বলেন, ‘পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করেই সোহেলের হাত ধরেছিলাম। এখনো চলছি। কখনো কোথাও যেতে চাইলে আমি শুধু বলি আর সে তার পিঠে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া-আসা করে। আমার মনের চাহিদা পূরণের জন্য সে তার সাধ্যমতো চেষ্টা করে। তাকে আমি ধন-সম্পদ কিছুই দিতে পারিনি, শুধু আমার ভালোবাসাটুকুই দিয়েছি। সে আমার সঙ্গে আছে। আমরা সুখেই আছি।’

jagonews24

পড়াশোনা শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সোহেল মিয়া। একদিন বিকেলে অফিস ছুটির সময় তার টেবিলের ড্রয়ারে থাকা একটি ১০ টাকার নোট বের করে দেখতে পান তাতে মোবাইল নম্বর দেওয়া। সেই নম্বরে মিসড কল দেন সোহেল। অপরপ্রান্ত থেকেও মিসড কল আসে। এভাবেই তাদের মধ্যে কথা বলাবলি শুরু। এরপর প্রেম, তারপর বিয়ে। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে প্রেমের শুরুটা হলেও ডিসেম্বরে গিয়ে বিয়ে করেন তারা।

jagonews24

সোহেল মিয়া বলেন, ‘শারীরিকভাবে চলাচলে অক্ষম থাকলেও তার ভেতরে আমার প্রতি ভালোবাসার কোনো কমতি আজ পর্যন্ত পাইনি। একজন স্বাভাবিক মেয়ে স্বামীর জন্য যতটুকু না করতে পারে সে তার চেয়েও বেশি কিছু করার চেষ্টা করে আমার জন্য। তার মূল গুণটাই হচ্ছে সে পুরোপুরি আমার ভক্ত। সে আমাকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। আমিও তার ভালোবাসায় মুগ্ধ। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এ ভালোবাসা চলবে।’

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এএসএম