ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

হুমকির মুখে শত কোটি টাকার ভোলার শহররক্ষা বাঁধ

জুয়েল সাহা বিকাশ | প্রকাশিত: ০৫:৪১ পিএম, ১১ মার্চ ২০২২

সংস্কারের অভাবে হুমকির মুখে পড়েছে শত কোটি টাকা ব্যয়ের ভোলার তুলাতুলি এলাকার শহররক্ষা বাঁধ। বাঁধের ওই এলাকার বিভিন্ন অংশে ব্লকধসের কারণে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এবছর বর্ষার মৌসুমের আগে সংস্কার না করা হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে ভোলার শহরে। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর, ধনিয়া, কাচিয়া, পূর্ব ইলিশা ও রাজাপুর ইউনিয়নের চরমোহাম্মদ আলীন পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত (২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য) বাঁধটি ভোলা শহররক্ষা বাঁধ বা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হিসেবে ধরা হয়। নদীভাঙন ঠেকাতে ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সালে দুই দফায় ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের মুন্সিবাড়ি (বর্তমানে শাহবাজপুর পর্যটনকেন্দ্র) থেকে উত্তরে বালিয়াকান্দি দফাদার পর্যন্ত তিন হাজার ৩০০ মিটারের দৈর্ঘ্য ও ৩৪ মিটার প্রস্থের ব্লকবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ভোলা শহররক্ষা বা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বিভিন্ন ধাপে প্রকল্পে ব্যয় হয় প্রায় শত কোটি টাকা।

jagonews24

এ প্রকল্পের প্রথম ধাপে তুলাতুলি মুন্সিবাড়ি থেকে তুলাতুলি লঞ্চঘাট পর্যন্ত নির্মাণ হয় দুই কিলোমিটার মেঘনা তীর সংরক্ষণ ব্লকবাঁধ। তবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে প্রায় দেড় কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ ব্লকবাঁধের ধসের সৃষ্টি হয়েছে।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে শহররক্ষা বাঁধের তুলাতুলি এলাকায় ২৫০ মিটার বাঁধ সংস্কারের জন্য অধিদফতরে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়। বরাদ্দ হয় ৪৯ লাখ টাকা। ওই সময় ৯ হাজার ৭২টি বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। কিন্তু বর্তমানে তুলাতুলি মেঘনা নদীর হার্ড পয়েন্টের প্রায় চার থেকে পাঁচটি জায়গায় ব্লকবাঁধের ধসের সৃষ্টি হয়েছে।

jagonews24

তুলাতুলি এলাকার বাসিন্দা প্রিন্স বাবু গোলদার ও মো. বশার জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রায় ২৩ বছর আগে তুলাতুলি ব্লকবাঁধের কাজ শুরু হয়। আমরা অনেক বছর নিশ্চিন্তে নিরাপদে বসবাস করছিলাম। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে তুলাতুলি এলাকার বিভিন্ন অংশে ব্লকবাঁধে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। মেঘনার স্রোতের কারণে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ থেকে বালু বের হয়ে ধসে গেছে। এবছর বর্ষার মৌসুমের আগে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার না করা হলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে জোয়ারের পানি তুলাতুলিসহ ভোলার শহরের প্রবেশ করবে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন ও তুলাতুরি মৎস্য ঘাটের ব্যবসায়ী মঞ্জু ইসলাম বলেন, ‘বারবার অস্থায়ীভাবে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং করে তো লাভ হয় না। আমরা চাই এবার স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হোক।’

jagonews24

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো-১) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘নৌকা, ট্রলার ও লঞ্চের ধাক্কায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফুটো হয়ে বালু বের হয়ে গেছে। তুলাতুলি এলাকায় এক কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ নদীতীর সংরক্ষণসহ মোট পাঁচ কিলোমিটারের একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগে প্রকল্পটি অনুমোদন না হলে তুলিতুলি ঝুঁকিপূর্ণ অংশে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হবে।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর/এএসএম