ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দাফনে ছেলের বাধা, কবরে নয় মর্গে গেলো বাবার মরদেহ

জেলা প্রতিনিধি | মানিকগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৯:২৪ এএম, ১৮ মার্চ ২০২২

কফিনে মোড়ানো মরদেহ। খোঁড়া হয়েছে কবর। জানাজার জন্য জড়ো হয়েছেন শতাধিক মানুষ। কিন্তু গৃহত্যাগী এক সন্তান হঠাৎ বাড়ি ফিরে বাবার মরদেহ দাফন বন্ধ করে দেন। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকালে অটোরিকশার ধাক্কায় মারা যান জালাল উদ্দিন (৭০)।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, জালাল উদ্দিনের চার ছেলে ও দুই মেয়ে। মেজো ছেলে নুরুল ইসলামের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ভালো ছিল না। অনেক বছর আগে তিনি বাড়ি ছেড়েছেন। বাবা-মার খোঁজ-খবরও নেন না। মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে বাবা ও ভাইদের হুমকি-ধমকি দিতেন। বছর খানেক আগে এ বিষয়ে নুরুল ইসলামের নামে জালাল উদ্দিন থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন। গ্রাম্য সালিশ হয়েছে বহুবার।

বৃহস্পতিবার জালাল উদ্দিন নিহত হলে সন্তানরা তার জানাজাসহ দাফনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। কিন্তু জানাজার ঠিক আগমুহূর্তে হাজির হন নুরুল ইসলাম। জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তিনি অভিযোগ করেন তার বাবাকে তিন ভাই মিলে হত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ গ্রামবাসীও দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে মরদেহ দাফনে অনুমতি দেওয়ার জন্য নুরুল ইসলামকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও সম্মতি দেননি তিনি।

জালাল উদ্দিনের বড় ছেলে তারা মিয়া জানান, তার ভাই নেশাগ্রস্ত। সন্তানসহ স্ত্রীও তাকে ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। এখন নুরুল ইসলাম কোথায় থাকেন, কী করেন তা কেউ জানে না। দীর্ঘদিন ধরে বাবার সম্পত্তির ওয়ারিশ দাবি করে আসছিলেন তিনি। বাবা দিতে রাজি না হওয়ায় বাবা ও ভাইদের মারধর করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন মিয়া জানান, জালাল উদ্দিনের জানাজা পড়তে শ্রীবাড়ী চৌরাস্তা মোড়ে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তার মতো অনেকেই এসেছিলেন। ছেলে নুরুল ইসলাম জানাজা বন্ধ করে পুলিশকে খবর দেন। তিনি ভাইদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে খবর দেন।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্ট ও স্থানীয়দের তথ্যমতে জালাল উদ্দিন অটোরিকশার ধাক্কায় নিহত হয়েছেন। কিন্তু তার মেজো ছেলে নুরুল ইসলাম অভিযোগ করছেন তার ভাইয়েরা বাবাকে হত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ উল্লাহ জানান, কফিনে মোড়ানো অবস্থায় জালাল উদ্দিনের মরদেহ রাতে হাসপাতাল মর্গে পৌঁছেছে। সকালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।

বি.এম খোরশেদ/আরএইচ/এমএস