বকশিগঞ্জে রাক্ষুসী রূপ নিয়েছে দশানী নদী
উজানের পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের বকশিগঞ্জে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে দশানী নদী। এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে কুশলনগর গ্রামের ৩০টি বসতভিটাসহ ফসলি জমি। নদীর করাল গ্রাসে বসতভিটা হারিয়ে অনেক পরিবার এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুইদিন আগে উপজেলার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের কুশলনগর গ্রামে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের কবলে পড়ে গ্রামের ৩০টি বসতবাড়ী মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিলীন হয় ফসলি জমি ও গাছপালা। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে সাজিমারা গ্রামের হাট-বাজার, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাদের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি দশানী নদীর গর্ভে বিলীন হলেও ভাঙন প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন। কারো সহযোগিতা না পেয়ে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ভাঙনরোধে সহায়তা চাচ্ছেন আল্লাহর কাছে।

শুধু নিলক্ষিয়াতেই নয়, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বাঙ্গাল পাড়া, কতুবেরচর, চর আইরমারী এবং মেরুরচর ইউনিয়নের কলকিহারা গ্রাম ও টুপকার চরেও তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।
কুশলনগর গ্রামের বৃদ্ধা হাজেরা বেগম জানান, তীব্র নদীভাঙনে তারা আজ নিঃস্ব। ফসলি জমি আগেই খেয়েছে রাক্ষুসী দশানী নদী; শেষ আশ্রয়টুকুও নিয়ে গেলো আজ। তাই নদীতীরে হারিয়ে যাওয়া মাথার গোঁজার ঠাঁইটুকু দেখছেন চেয়ে চেয়ে।

অভিমানের সুরে তারা বলেন, প্রতিবার বন্যা এলেই ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। ভাঙন শুরু হলে কেউ কেউ মাঝেমধ্যে দেখা দেন। ভাঙনের আগে কারো কোনো খোঁজ মেলে না।
সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু জাগো নিউজকে বলেন, তার ইউনিয়নের বাঙ্গাল পাড়া ও কতুবেরচর গ্রামের বিশটি পরিবারের ঘরবাড়ি জিঞ্জিরাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের শিকার এসব পরিবার অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বসতভিটা হারিয়ে নিম্নআয়ের এসব পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনমুন জাহান লিজা জাগো নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নদী ভাঙনের শিকার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে বন্যাদুর্গত এলাকায় আরও ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
নাসিম উদ্দিন/এফএ/জেআইএম