বন্যায় নষ্ট হাছন রাজার স্মৃতি, হতাশা নিয়ে ফিরছেন দর্শনার্থীরা
মিউজিয়ামে এখন হাছন রাজার তেমন কোনো স্মৃতি নেই
টাঙ্গুয়ার হাওরসহ প্রকৃতির লীলাভূমিতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা একসময় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া এলাকার হাছন রাজা মিউজিয়াম ঘুরে যেতেন। কিন্তু ভয়াবহ বন্যায় এরও ছন্দপতন ঘটেছে। বন্যার পানিতে হাছন রাজার স্মৃতি নষ্ট হওয়ায় দুমাস ধরে মিউজিয়ামটি বন্ধ রয়েছে। নেই সাইনবোর্ডও। ফলে হতাশা নিয়ে ফিরছেন দর্শনার্থী ও পর্যটকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মরমি কবি হাছন রাজার ব্যবহার্য সামগ্রীসহ গানের বই ও পাণ্ডুলিপি নিয়ে পারিবারিক উদ্যোগে ২৫ বছর আগে তেঘরিয়ার বাড়ির এক কক্ষে চালু হয়েছিল হাছন রাজা মিউজিয়াম। পরবর্তী সময়ে হাছন রাজার প্রপৌত্র সামারীন দেওয়ানের চেষ্টায় মিউজিয়ামটির কলেবর বৃদ্ধি পায়। নানা সংগ্রহে সমৃদ্ধ হয় মিউজিয়ামটি। মিডিয়াসহ সামাজিক মাধ্যমে মিউজিয়ামের প্রচার পায় দেশে-বিদেশে। সুনামগঞ্জে আসা পর্যটকসহ দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই ভিড় করতেন বিখ্যাত এ মরমি সাধকের বাড়িতে। ঘুরে ঘুরে দেখতেন হাছন রাজার ব্যবহারের পোশাকসহ অন্য সবকিছু।
১৬ জুনের ভয়াবহ বন্যায় বুক সমান পানি হয়েছিল হাছন রাজা মিউজিয়ামে। এতে সব আসবাবপত্র ডুবে যায়। সংগৃহীত ছবি, পাণ্ডুলিপি, বাদ্যযন্ত্রের অনেক কিছুই ডুবে নষ্ট হয়।

বিশ্বম্ভরপুরের মেরুয়াখলার বাউল জামাল উদ্দিন মিউজিয়ামে এসে বিষণ্ন মন নিয়ে ফিরছিলেন। ফেরার সময় বন্ধ মিউজিয়ামের বারান্দায় বসে কবির রেখে যাওয়া গান গাইলেন।
হাসন রাজা মিউজিয়াম দেখতে আসা সিয়াম আহমদ বলেন, আমি ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে এসেছিলাম। টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ শেষে ভাবলাম হাসন রাজার মিউজিয়ামটি একটু ঘুরে দেখবো। কিন্তু এখানে এসে দেখি মিউজিয়াম বন্ধ। বন্যায় নাকি মিউজিয়ামের সব নষ্ট হয়ে গেছে। কি করবো হতাশা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।
ঢাকা থেকে আসা আরেক দর্শনার্থী হাবিব চৌধুরী বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য ঠিকই উপভোগ করে আসলাম। কিন্তু হাসন রাজার বাড়ি এসে মিউজিয়ামের সব জিনিসপত্র নষ্ট ও মিউজিয়াম বন্ধ থাকায় মন খারাপ নিয়ে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।
হাছন রাজার প্রপৌত্র সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান শামছুল আবেদীন জাগো নিউজকে বলেন, বন্যায় হাসন রাজার মিউজিয়ামের ভেতরে পানি ঢুকে। এতে হাসন রাজাকে নিয়ে সংরক্ষিত যত বই এবং আসবাবপত্র ছিল সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। দুই মাস ধরে হাসন রাজা মিউজিয়ামটি বন্ধ আছে।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিকভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে মিউজিয়ামটি চালু করার।
লিপসন আহমেদ/এসজে/এএসএম