সুন্দরবনে ড্রোন আটক : বিপাকে তিন সাংবাদিক
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় ডকুমেন্টারি তৈরির সময় বিদেশি সাংবাদিকদের ব্যবহৃত ক্যামেরাযুক্ত ড্রোন জব্দ করা হয়েছে। আটকের এক সপ্তাহ পার হলেও ড্রোনটি ফেরত বা মামলা দায়ের করেনি বনবিভাগ।
গত ৩১ জানুয়ারি সুন্দরবনে ড্রোনের সাহায্যে ছবি তোলার সময় বনবিভাগ বিদেশি তিন সাংবাদিকের ব্যবহৃত একটি ড্রোন আটক করে। জলবায়ু পরিবর্তনে সুন্দরবনের উপর প্রভাব বিষয়ে আন্তর্জাতিক একটি ডকুমেন্টারি তৈরির অনুমতি নিয়ে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশ আসে ওই তিন সাংবাদিক। সুন্দরবন বিভাগের পূর্ব অনুমতি না নিয়ে অভয়অরণ্যে ড্রোন উড়িয়ে বিপাকে পড়া ফ্রান্সের `এআরটিই` টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক এখনো সুন্দরবনে অবস্থান করছেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাগমা টুর অ্যান্ড ট্রাভেলর্স কোম্পানি এমএল বাওয়ালী লঞ্চে করে অন্যান্যদের সঙ্গে ফ্রান্সের `এআরটিই` টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক গাই কিউসি, টিমো এভাম্যান ও নাসিম এলমাউন এত সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন। ৩১ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে ওই তিন সাংবাদিক কটকা ওয়ার্ড হেরিটেজ বনের আকাশে ক্যামেরা সমৃদ্ধ একটি ড্রোন উড়িয়ে বন্য প্রাণিসহ জীববৈচিত্র্যের ছবি ধারণ করতে থাকে।
বিষয়টি প্রথমে জেলে-বনজীবীদের নজরে এলে কটকা অভয়ারণ্যে সোরগোল পড়ে যায়। পরে কটকা অভয়ারণ্যে কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জের শাহ নোমান তিন সাংবাদিককে উড়ানো ওই ড্রোনটি নিচে নামিয়ে আনতে বাধ্য করে। এই অভায়ারণ্যে ড্রোন উড়ানোর জন্য সুন্দরবন বিভাগ থেকে পূর্ব অনুমতি না নেয়ায় ড্রোনটিকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিন সাংবাদিক সুন্দরবন নিয়ে তাদের দেশের টেলিভিশনের জন্য ডকুমেন্টারী করার কথা জানালে ড্রোনটি রেখে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ফ্লাইং ক্যামেরাসহ আটক ওই ড্রোনটি হচ্ছে ডিজেআই কোম্পানির। যার মডেল নং- পি-৩৩০ জেড, সিরিয়াল নং পিএলএল-৬৩৬১৫৪১২৬। একটি ব্যাটারিসহ ড্রোনটির সঙ্গে একটি রিমোটও রয়েছে।
বাংলাদেশের আকাশে উড়াবার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতিও দেখাতে পারেনি ফ্রান্সের ওই তিন সাংবাদিক। আটক ওই ড্রোনটি বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের অফিসে নেয়ার পর তা আবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয়। জানানো হয় হয়, বন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। গত এক সপ্তাহ ধরে আটক এই ড্রোনটির বিষয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি সুন্দরবন বিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ কটকা অভয়ারণ্য থেকে ড্রোন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এখন ড্রোনটির বিষয়ে কি করা হবে তা জানতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সোমবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে, পাগমা টুর অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানির মালিক নজরুল ইসলাম বাচ্চু দাবি করেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ফ্রান্সের `এআরটিই` টেলিভিশন জলবায়ু পরিবর্তনের উপর সুন্দরবনে প্রভাব বিষয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করতে `জেড` প্রোডাকশন কোম্পানি তিন সাংবাদিক বাংলাদেশে আসে। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে যায়। গত ৩১ জানুয়ারি ফ্লাইং ক্যামেরাযুক্ত ড্রোনটি বনবিভাগ আটক করে। পরে ডকুমেন্টারির বিষয়টি জানতে পেরে ড্রোনটি রেখে ওই তিন সাংবাদিককে বনবিভাগ ছেড়ে দেয়।
নজরুল ইসলাম বাচ্চু আরো জানান, সুন্দরবনে ড্রোন উড়াতে বনবিভাগের অনুমতির বিষয়টি ওই তিন সাংবাদিকের জানা না থাকার কারণে তারা বিড়ম্বনায় পড়েছে। তারা এই বিষয়টি না জানার কারণ উল্লেখসহ ভুল স্বীকার করে সুন্দরবন বিভাগের কাছে ড্রোনটি ফেরত চেয়ে আবেদন করেছে। সোমবার পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠ সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।
বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধানের জন্য ওই তিন সাংবাদিক ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তারা এখনো সুন্দরবনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের সুন্দরবনে থাকারও সকল অনুমতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শওকত আলী বাবু/এআরএ/এবিএস
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ ঠাকুরগাঁওয়ে সারের ডিলারশিপ বাঁচাতে পদ ছাড়লেন ইউপি চেয়ারম্যান
- ২ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়ন না পাওয়া দুই নেতার সমর্থকদের
- ৩ খুলনায় বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে গণমিছিল
- ৪ ১৫ বছরে দেশ থেকে সাড়ে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে: শিবির সভাপতি
- ৫ মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ