পটুয়াখালীর কলাপাড়া
সাগরে জাল ফেলার অপেক্ষায় জেলেরা, চাল না পাওয়ার আক্ষেপ
দেশব্যাপী ইলিশ শিকারে টানা ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর)। মধ্যরাত থেকে ইলিশ শিকারে সাগরে নামবেন জেলেরা। এরই মধ্যে প্রস্তুতি শেষে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার জেলে।
শুক্রবার সকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিভিন্ন জেলে পল্লি ও বন্দরগুলো ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা জাল, ইটসহ প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জামাদি প্রস্তুত রেখে মাছ ধরার অপেক্ষায় বসে আছেন। তবে তাদের চোখে-মুখে রয়েছে ক্লান্তির ছাপ। কারণ ২২ দিনের অবরোধে সরকার থেকে প্রতি জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও পাননি তারা। পরিবারের খরচ মেটাতে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন অনেক জেলে।

কুয়াকাটা এলাকার জেলে আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘অবরোধের সময় আজ শেষ। তাই কাজ শেষ করে বসে আছি। রাত ১২টার পরে সমুদ্রে নামবো। তবে সরকার আমাদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। এ সময় সংসার চালাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়েছি।’
তুহিন নামের আরেক জেলে বলেন, ‘সরকার বছরে দুইবার অবরোধ দেয়। এছাড়া মাঝেমধ্যে আবহাওয়া খারাপতো হয়ই। যে কারণে প্রতিবছর আমরা ঋণী হই। তবে এইবার সাগরে অনেক মাছ পাবো বলে আশা করছি। তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে জীবনে।’

নৌপুলিশ কুয়াকাটা ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোর্শেদ জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় জেলে ও মৎস্য নেতারা অনেক সচেতন। বেশিরভাগ জেলেই ২২ দিনের অবরোধ সফল করতে আমাদের সহযোগিতা করেছেন।’
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জাগো নিউজকে বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও এবারের ২২ দিনের অবরোধ সফল হয়েছে। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচন ও ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব জায়গায় চাল দিতে পারিনি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উপজেলার জেলেদের কাছে চাল পৌঁছে দিতে পারবো বলে আশা করছি।’

মা ইলিশের প্রজনন নিশ্চিতে নদী ও সাগরে মাছ শিকার বন্ধ ঘোষণা করে গত ৬ অক্টোবর ২২ নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এ সময় ইলিশ পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/এএসএম