বরাদ্দের ৫ মাস পর ত্রাণের চাল বিতরণ, ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ
ওজনে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সুবিধাভোগীরা
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দের পাঁচ মাস পর ত্রাণের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে ওজনে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, শিবপাশা ইউনিয়নে চলতি বছরের জুন মাসে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৮ টন চাল ও নগদ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান নলিউর রহমান তালুকদার বরাদ্দকৃত চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করেননি। এসব আত্মসাতের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন।
চাল ও টাকা বিতরণ না করেই ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেন। বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ইউপি চেয়ারম্যান যেন চাল সরাতে না পারেন এজন্য তারা পাহারা দিতে থাকেন। ফলে চালগুলো চেয়ারম্যান সরাতে পারছিলেন না বলে দাবি এলাকাবাসীর।
অপরদিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এলাকার শতাধিক মানুষ সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে নির্দেশ দেন।

এ অবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সোমবার (৭ নভেম্বর) দিনভর এসব চাল বিতরণ করেন। তবে চাল বিতরণ করলেও অনেককেই ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শিবপাশা গ্রামের বাসিন্দা শাহ সেলিম বলেন, ‘জুন মাসে বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য সরকার ৮ টন চাল ও নগদ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। এগুলো বণ্টন না করে ইউপি চেয়ারম্যান আত্মসাতের পাঁয়তারা করেন। কিন্তু মানুষ যখন জানতে পারলো তাদের জন্য বরাদ্দ এসেছে তখন তারা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। তাদের চাপে তিনি চাল বণ্টন করছেন। কিন্তু অনেকেই ১০ কেজির জায়গায় সাত-আট কেজি চাল পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নলিউর রহমান তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভুয়া অভিযোগ। যারা অভিযোগ করাচ্ছে তারা আমার নির্বাচনে পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল। তারা আমার সম্মান নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করছে। যাতে সুন্দরভাবে কাজ না করতে পারি।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা সালেহা সুমী জাগো নিউজকে বলেন, অর্থবছরের শেষ মুহূর্তে বরাদ্দ দেওয়ায় মাস্টাররোল করে চালটা রাখা হয়েছে। চাল তিনি আত্মসাৎ করেননি। কিন্তু দেরিতে বিতরণ করেছেন। এটি তার ব্যক্তিগত দায়।
ইউএনও আরও বলেন, অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগে জানাবো। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসজে/এএসএম