সংকটে নাজুক জামালপুর বিসিক নগরী, ব্যবসায়ীদের অনীহা
বিসিক ভবনের সামনে জলাবদ্ধতা, ভেঙে আছে সীমানা প্রাচীর
নানা সমস্যায় জর্জরিত জামালপুরের একমাত্র বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্প নগরী। গ্যাস সংকট, খানাখন্দে ভরা রাস্তা-ঘাট এবং অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা কারণে এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করার আগ্রহ হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় অসন্তোষ তারা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ ধারণ করছে। এতে পুরো এলাকাজুড়ে ময়লা পানি ও বর্জ্যে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বিসিক উপ-ব্যবস্থাপক কার্যালয় সূত্র জানায়, স্থানীয় পর্যায়ে শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টি ও নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিসিক ১৯৮০ সালের ১৮ ডিসেম্বর জামালপুর পৌরসভার দাপুনিয়া এলাকায় ২৬ দশমিক ৩০ একর জমির ওপর এ শিল্প নগরী গড়ে তোলে। এখানে ৮২টি ইউনিটে ১৯৮ প্লট আছে।
প্রতিষ্ঠার শুরুতেই এসব প্লট উদ্যোক্তাদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। বর্তমানে ৮২টি ইউনিটের মধ্যে ৫৬টি পুরোদমে পণ্য উৎপাদন করছে, ছয়টি ইউনিট বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে।
এদিকে ১২টি বন্ধ হয়ে গেছে এবং আটটি ইউনিটের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। এখানে প্রতিদিন এক হাজার ৮৪৮ জন শ্রমিক কাজ করছেন, তাদের মধ্যে ৭২৩ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ১২৫ জন নারী শ্রমিক আছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ড্রেন বন্ধ থাকায় বিসিক ভবনের প্রধান ফটকসহ এর অধিকাংশ অংশে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ছোট মিলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়াসহ গুদামে থাকা আলু নষ্ট হচ্ছে। এতে ছোট মিল মালিকরা লোকসানের আশঙ্কায় মিল বন্ধ করার চিন্তা করছেন।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী প্রতিটি এস্টেটের মালিকদের গ্যাস সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো পাননি। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া ভেতরের রাস্তাগুলো বছরের পর বছর মেরামত না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে আছেন কারখানার মালিকসহ শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মিল মালিক বলেন, ‘জামালপুর বিসিক ও জামালপুর পৌরসভা উভয়ই এস্টেট মালিকদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ ও হোল্ডিং চার্জের নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে থাকে। এস্টেটের কোনো মালিক এ চাঁদা না দিলে লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না।’
চাঁদার বিষয়ে জানতে চাইলে জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি তিনি ভালোভাবে জানেন না। পৌর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’
জামালপুর বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক সম্রাট আকবর জাগো নিউজকে বলেন, এখানে উৎপাদিত বেশিরভাগ পণ্যই প্রকৌশল পণ্য। এ পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোকে খুব কম দূষিত করে। জলাবদ্ধতা নিরসনে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ৫ হাজার ৯৩৫ মিটার ড্রেন সংস্কার করা হবে।
এসজে/এএসএম