ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বেড়েছে বাইসাইকেলের দাম, দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা

সফিকুল আলম | পঞ্চগড় | প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২২

পঞ্চগড়ে বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের অন্যতম বাহন বাইসাইকেল। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে বাইসাইকেলে করে স্কুলের যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় ভোর থেকে দেখা যায় এমন দৃশ্য।

সাধারণত ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা নতুন বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে বা প্রাইভেট পড়তে যায়। তবে বর্তমানে খাতা-কলমসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাইসাইকলের দাম। এতে নতুন বছরে সন্তানদের স্কুল-কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা।

Cycle-(3).jpg

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) জেলা শহরের বিভিন্ন শোরুম ও সাইকেল বিক্রির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, গত তিন মাসে কোম্পানিভেদে বাইসাইকেলের দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। স্কুল-কলেজে পরীক্ষা শেষে বা নতুন ক্লাস শুরুর সময় সাধারণত সাইকেল বিক্রি বেড়ে যায়। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। বিভিন্ন সাইকেলের শোরুমে মালিকসহ বিক্রয়কর্মীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।

প্রতিবছর ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বিভিন্ন শোরুমে সাইকেল কিনতে ভিড় করেন শিক্ষার্থীসহ ক্রেতারা। তবে চলতি বছর বেচাকেনায় এত মন্দা যে বুধবার বিকেল পর্যন্ত জেলা শহরে কোনো কোনো বাইসাইকেলের বড় শোরুমে একটি সাইকেলও বিক্রি হতে দেখা যায়। অথচ আগে এসব শোরুম থেকে প্রতি মাসে গড়ে একশর মতো সাইকেল বিক্রি হতো।

Cycle-(3).jpg

জেলা শহরের মসজিদপাড়া মহল্লার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে এবার সপ্তম শ্রেণিতে উঠবে। করতোয়া কালেক্টরেট স্কুলে লেখাপড়া করে। প্রতিদিন রিকশায় যাতায়াত করতে ২০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। এজন্য আমার মেয়ে সবসময় সাইকেলের কথা বলে। কিন্তু দাম বৃদ্ধি এবং নিজের অর্থাভাবে মেয়েকে একটি সাইকেল কিনে দিতে পারছি না।’

শহরের লুৎফর সাইকেল স্টোরের মালিক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা আগে প্রতি মাসে গড়ে একশর মতো সাইকেল বিক্রি করতাম। বিশেষ করে এই সময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল বিক্রির হিড়িক পড়ে যেতো। কিন্তু বর্তমানে ক্রেতার অভাবে বসে আছি।’

তিনি বলেন, এমনিতেই ব্যবসায় মন্দা চলছে। এর ওপর সাইকেলপ্রতি ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এখন মাসে গড়ে ১৫-২০টি সাইকেল বিক্রি হচ্ছে।

Cycle-(3).jpg

পঞ্চগড়ের দুরন্ত স্পোর্টস গ্যালারির ম্যানেজার জুবায়ের করিম জানান, শিক্ষার্থীদের ব্যবহার উপযোগী বাইসাইকেলগুলোর দাম সাত থেকে ১২ হাজার টাকা। তবে গত তিন মাসে সাইকেলপ্রতি ৫০০-৭০০ টাকা দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, এখন সাইকেল বিক্রি অনেক কমে গেছে। তবে পরের সপ্তাহে বিক্রি বাড়তে পারে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করি।

Cycle-(3).jpg

ড. আবেদা হাফিজ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক এসএম হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘একসময় মেয়েরা সময়মতো স্কুল-কলেজে আসতে পারতো না। কিন্তু এখন আর দেরি হয় না। কলেজে মেয়েদের উপস্থিতিও বেড়ে গেছে। স্কুল-কলেজের বেশিরভাগ মেয়ে সাইকেলে করেই আসে। মেয়েদের সাইকেল চালানো এখন আর মানুষ ভিন্ন চোখে দেখে না।’

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যন্ত এলাকায় নারী শিক্ষা প্রসারে সাইকেলেরও ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের গণপরিবহনের জন্য এখন আর সড়ক- মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না।

Cycle-(3).jpg

তিনি বলেন, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির মেয়েদের লেখাপড়ায় উৎসাহ জোগাতে জেলা প্রশাসন থেকে পাঁচ হাজারের বেশি বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। গরিব ও মেধাবী মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

সফিকুল আলম/এসআর/এমএস