ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

হাসপাতালের সেবা বন্ধ করে সভা, রোগীদের ভোগান্তি

জেলা প্রতিনিধি | মানিকগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের নিচতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন নারী-পুরুষ। তাদের সামনে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা কেন্দ্রের দুই রুমেই তালা ঝুলছে। জানা গেলো, সেখানে সবাই এসেছেন এই পরীক্ষার রিপোর্ট নিতে। কিন্তু রুমে তালা ঝুলিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা মিটিংয়ে আছেন।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালটিতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

jagonews24

একই সময় নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা গেলো, প্রতিটি চিকিৎসকের কক্ষই ফাঁকা। রুমের সামনে রোগীদের সিরিয়ালের টিকিট অথবা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজ হাতে দাঁড়িয়ে আছেন প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী। চিকিৎসক রুমে ফেরার অপেক্ষায় আছেন তারা। রোগীদের চোখেমুখে ক্লান্তি আর বিরক্তির ছাপ। এভাবে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে মিটিং করার ঘটনা নিয়ে ক্ষোভও জানান অনেকে।

সুমি আক্তার নামে এক রোগী জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে তার ঠান্ডা-জ্বর। সঙ্গে কাশিও। বৃহস্পতিবার কফ পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নমুনা দিয়েছেন। শনিবার তার পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু এসে দেখেন রুমে তালা ঝুলছে।

jagonews24

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের ২১২ নম্বর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিবালয়ের ধুসর গ্রামের রফিকুল ইসলাম। জানালেন, তার শ্বাসকষ্ট। এজন্যই ডাক্তার দেখাতে এসেছেন। কিন্তু এসে দেখেন চিকিৎসকরা সবাই মিটিংয়ে আছেন।

বহির্বিভাগে পায়ে ঘা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন উপজেলার কাতরাসীন গ্রামের হান্নান। তার সঙ্গে থাকা আরও বেশ কয়েকজন রোগী জানালেন, প্রায় আধাঘণ্টা ধরে কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা মিলছে না।

হাসপাতালের চিকিৎসা কাযর্ক্রম বন্ধ রেখে এভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মিটিং করা নিয়ে ক্ষোভ জানান অপেক্ষমাণ রোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী শনিবার দুপুর ১২টায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাসিক সভা ডাকেন। সভাটি চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এসময় সেবা কাযর্ক্রম বন্ধ থাকায় দুর্ভোগের শিকার হন রোগীরা। দীর্ঘসময় অপেক্ষার পরও সেবা না পেয়ে অনেকেই ফিরে যান।

jagonews24

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বীর সিদ্ধান্তের কারণেই রোগীরা হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এই সভা দুপুর একটার পরও তিনি করতে পারতেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী বলেন, অফিস টাইমেই মিটিং করার কথা। এতে কোনো সমস্যা নেই। বিভিন্ন দপ্তরে তো এক-দুইজন করে থাকার কথা।

মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের স্বাভাবিক কাযর্ক্রম ব্যাহত করে কোনো মিটিং করার কথা নয়। নিজেদের কোনো কাজের কারণে রোগীদের দুর্ভোগ কাম্য হতে পারে না। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে।

বি এম খোরশেদ/এমআরআর/জিকেএস