ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

একসঙ্গে ৪ নবজাতকের জন্ম

এক মেয়ের মৃত্যু, টাকার অভাবে ৩ শিশুর চিকিৎসা বন্ধের পথে

জেলা প্রতিনিধি | মাদারীপুর | প্রকাশিত: ১২:০২ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩

মাদারীপুর শিবচরে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকের মধ্যে এক মেয়ে মারা গেছে। রোববার (১৫ জুন) সকালে বাড়িতেই মারা যায় শিশুটি। এদিকে টাকার অভাবে অপর তিন নবজাতকের চিকিৎসা থেমে যেতে বসেছে।

নবজাতকগুলোর ফুপু রানু বেগম বলেন, চিকিৎসার অভাবে দুই শিশুকে বাড়ি আনা হয়। আজকে এক মেয়ে মারা গেছে। অন্য মেয়েটিও অসুস্থ। আমরাই তার দেখাশোনা করছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের ব্যাপারীকান্দি ক্লাববাজার গ্রামের বাসিন্দা মো. মানিক শিকদারের ছেলে আনোয়ার শিকদার। প্রায় সাত বছর আগে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মো. ইনসান শরীফের মেয়ে পিংকি আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি।

বিয়ের প্রায় দুবছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর তাদের আর কোনো সন্তান না হওয়ায় চিকিৎসকের কাছে যান। একটি ছেলের আশায় তারা দীর্ঘদিন চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা খরচও হয় তাদের। এর মধ্যে গৃহবধূ পিংকি দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হন।

৭ জানুয়ারি সকালে পিংকির প্রসব ব্যথা উঠলে প্রথমে তাকে শিবচরের পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সেখান থেকে তাকে ওইদিনই দুপুরে ঢাকার বড় মগবাজার আদদ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত ৮টার দিকে সিজারের মাধ্যমে তিন মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম দেন পিংকি।

তবে জন্ম হওয়ার পরপরই নবজাতকদের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। ওইদিন রাত ১টার দিকে চিকিৎসকরা তাদের এনআইসিইউতে (নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) রাখেন। তবে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছিল। কিন্তু এত জোগান দিতে না পারায় দরিদ্র কৃষক আনোয়ার শিকদার দুই সন্তানকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। বাড়িতেই রোববার সকালে এক মেয়ে মারা যান।

একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার সন্তানের বাবা আনোয়ার শিকদার বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমি এক সঙ্গে চার সন্তানের বাবা হয়েছিলাম। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় দুই সন্তানকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেই। বাকি দুই সন্তানের ঢাকার আদদ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এক মেয়ে এনআইসিইউতে আছে। ছেলে সন্তান বেডে তার মায়ের সঙ্গে আছে। দুর্ভাগ্য হলো আজ সকালে বাড়ি থেকে খবর পেলাম এক মেয়ে মারা গেছে। অন্য মেয়েটিও ভীষণ অসুস্থ। এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সন্তানদের বাঁচাতে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে খরচ করছি। এখন আর কোনো পথ নাই। কি করবো বুঝতে পারছি না। জানি না টাকার অভাবে নবাগত সন্তানদের কী হবে। তাই বাকি তিন সন্তানকে বাঁচাতে সবার কাছে সহযোগিতা চাই। সবার সহায়তায় হয়তো সন্তানদের চিকিৎসা করাতে পারবো। তা না হলে কী হবে জানি না।’

আদ-দ্বীন হাসপাতালে জনসংযোগ কর্মকর্তা রুদ্র জাগো নিউজকে বলেন, এক শিশু মায়ের কাছে আছে। আরেক শিশু এখনো এনআইসিউতে আছে।

নবজাতকদের চিকিৎসায় হাসপাতালের খরচ চালাতে পারছে না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে বিশেষ বিবেচনায় অনেক সময়ই বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ রোগীরও অনেক ক্ষেত্রে অনেক ছাড় দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসজে/এমএস