মা হনুমানের মৃত্যুতে কাঁদছিল শাবক
মায়ের মৃত্যুর পর একা হয়ে পড়ে শাবকটি
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সংরক্ষিত সবুজ বনাঞ্চল লাঠিটিলা। এ বনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবারো একটি চশমাপরা হনুমানের মৃত্যু হয়েছে। মায়ের মৃত্যুতে অনবরত কান্না করতে থাকে শাবক হনুমান।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাতে লাঠিটিলা ছড়ার পাশে একটি চশমাপরা হনুমানের মরদেহ পাওয়া যায়। পাশে একটি শাবক হাউ মাউ করে কান্না করছে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরা মায়ের দুধ পান করে বেঁচে থাকে। মায়ের দুধ পান করতে না পারলে এরকম ছোট শাবকগুলো বাঁচানো কঠিন। এরা মায়ের স্পর্শ ছাড়া বাঁচে না।
বন বিভাগের লাঠিটিলা বিটের দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গত দুমাসে একই জায়গায় দুটি চশমাপরা হনুমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। সংবাদটি খুবই দুঃখজনক। হনুমানের বাচ্চাটি রাস্তায় পড়ে আছে। স্থানীয়রা আমাকে খবর দিয়েছে। আমি বিষয়টি দেখবো।
গত বছরের ১ অক্টোবর একই স্থানে আরও একটি চশমা পরা হনুমানের মৃত্যু হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি বনের কাছে অবস্থিত দিলখোশ চা-বাগান এলাকায় সড়কের পাশে মৃত অবস্থায় একটি চশমাপরা হনুমান শাবককে পাওয়া গিয়েছিল। তারও মৃত্যু হয়েছিল বিদ্যুৎস্পৃষ্টে। এভাবে একের পর এক হনুমানের মৃত্যু ঘটছে।
পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য পরিবেশকর্মী কামরুল হাসান নোমান বলেন, চিরসবুজ লাঠিটিলা বনে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রাণীর বসবাস আছে। তবে এভাবে একের পর এক হনুমান মারা গেলে অচিরে এসব বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাবে। এখনি এদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জরুরি।
পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা জোনাল অফিসের এজিএম এ কে এম আশরাফুল হুদা বলেন, বন বিভাগ থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের বৈদ্যুতিক লাইনে কাভার লাগানোর জন্য। আমরা সেটির ডিজাইন রেডি করে হেড অফিসে পাঠিয়েছি। হেড অফিসের প্রকৌশল বিভাগ লাইন নির্মাণের বিষয়টি দেখে। তবে বর্তমানে হেড অফিসে বিষয়টি কোন পর্যায়ে তা আমার জানা নেই।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হনুমানের মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো।
আব্দুল আজিজ/এসজে/এমএস