ভাঙনকবলিত পদ্মার তীর এখন বিনোদনকেন্দ্র
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙনকবলিত এলাকা এখন বিনোদনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে এখানে হাজারো পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢেউয়ের তালে তালে গিটার বাজিয়ে বন্ধুদের নিয়ে গান গাইছেন অনেকে। কেউ কেউ বাঁধে বসে বন্ধুদের সঙ্গে গল্পে মেতে উঠেছেন। নড়িয়া কুণ্ডেরচর ও জাজিরার ১০ কিলোমিটার এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ফুচকা চটপটির দোকান। এর মধ্যে আধুনিক রেস্টুরেন্ট তৈরি হয়েছে। সন্ধ্যা নেমে আসলে রেস্টুরেন্টগুলোতে শুরু হয় খাবার তৈরির ব্যস্ততা।
শরীয়তপুরের সদর, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট, ডামুড্যা, জাজিরাসহ মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসছেন এখানে।

শরীয়তপুর সদর থেকে ঘুরতে আসা ফয়সাল আহমেদ বলেন, একসময় এখানে আসতাম চোখের পানি ফেলতে এখন ঈদের ছুটিতে প্রতি বছর এখানে হাসি-আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে আসি। জয়বাংলা এভিনিউতে সন্ধ্যার পর অনেক মানুষ আসে। আমি ভাগনিকে নিয়ে আসছি। নদীতে অনেক ঢেউ ও অনেক বাতাস বইছে। অনেক ভালো লাগছে। এখানে কেউ না আসলে বুঝতেই পারবে না।
ভেদরগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আসাদ গাজী বলেন, আমরা এর আগেও নদীর তীরে মুক্ত হাওয়া খেতে এসেছি। সারাদিন গরমে অস্থির হয়ে গেছি। তাই সন্ধ্যার পর আসছি ঠাণ্ডা হতে। সেখানে বিভিন্নরকম বাহারি খাবার খেলাম।
আরও পড়ুন: ঈদে ঘুরতে পারেন যেসব বিনোদনকেন্দ্রে
তীরে পাথরের ওপর বসে গান গাইতে থাকা তানজিল আহমেদ বলেন, আমরা ২০ জন বন্ধু এসেছি গোসাইরহাট থেকে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নড়িয়া জয়বাংলা এভিনিউতে। কয়েকবছর আগেও এখানে নদীগর্ভে অনেককে ঘরবাড়ি ছাড়া হতে হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এখানে তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হয়েছে৷

খান ফাস্টফুড অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারী খাদিজা বলেন, এক সময় আতঙ্কে থাকতাম। কখন পদ্মার ভয়াল থাবা আমাদের সবকিছু নিয়ে যায়। আমাদের অনেক জায়গা নদীতে তলিয়ে গেছে। বাঁধ নির্মাণের পর দেখলাম এখানে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছে। বুদ্ধি করে একটা রেস্টুরেন্ট দিয়ে দিলাম। এখন দেখি ভালোই চলতেছে। ঈদের দিন আড়াই লাখ টাকা বেচাকেনা হয়েছে৷
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, নড়িয়া-কুণ্ডেরচর ও জাজিরার ১০ কিলোমিটার নদীর ডান তীরে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের পর থেকে ভাঙন কমে সেখানে তৈরি হয়েছে পর্যটন স্পর্ট। আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। যাতে কোনো রকমে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
আরএইচ/এমএস