ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বিয়ের আসরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল দাবি নবদম্পতির

জেলা প্রতিনিধি | ঝিনাইদহ | প্রকাশিত: ০৯:৩৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৩

ঝিনাইদহে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি এবং সহকর্মীর মুক্তি চেয়ে এক নবদম্পতি নতুন জীবন শুরু করেছেন। বিয়ের মঞ্চেই বর-কনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এই দাবি তোলেন।

এসময় তাদের অন্য সহকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। ওই দম্পতির বিয়ের আসরেই তারা সবাই মিলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের স্লোগান দেন।

এই নবদম্পতি হলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান ও একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে সুমাইয়া আফরিন।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বুধবার ঝিনাইদহ সদরের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে তাদের বিবাহোত্তর বৌভাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মাহমুদুল হাসান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক। তার স্ত্রী সুমাইয়া আফরিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে থাকা খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মী বলে জানা গেছে।

বর মাহমুদুল হাসান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আমাদের রাজনৈতিক সহকর্মী খাদিজাতুল কুবরা দীর্ঘ আট মাসেরও বেশি সময় কারাগারে আছেন। কুবরা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। অনেক চেষ্টা করেও তার জামিন হয়নি, কারণ এই আইনটি জামিন অযোগ্য।

jagonews24

তিনি বলেন, বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই আইনে মামলা রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার ও ভিন্নমত দমনে ক্ষমতাসীনদের একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। যে কারণে আমরা এই আইনটি বাতিলের দাবি করছি।

মাহমুদুল আরও বলেন, আমরা দুইজন নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছি। এই নতুন জীবন শুরুটা করতে চেয়েছি এই নির্যাতনমূলক আইন বাতিল ও খাদিজার মুক্তির দাবি জানিয়ে। সব জুলুমের অবসানের মাধ্যমে গণমানুষের মুক্তির সংগ্রামে বিবেকবান মানুষদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর প্রত্যয়েই আমরা বিয়ের অনুষ্ঠানে এই প্রতিবাদ জানিয়েছি।

বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এরকম একজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, বর-কনে উভয় উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছেন। এতে তাদের কেউ বাঁধা দেয়নি, বরং উৎসাহ দিয়েছেন।

বরের মা দিলরুবা খাতুন জানান, ছেলে ও ছেলের বন্ধুরা এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছেন। এতে তারা মৌন সমর্থন দিয়েছেন। তাদের এক রাজনৈতিক সহকর্মী কারাগারে আছেন। তারাও ওই কর্মীর মুক্তির দাবি করেন।

এদিকে, বউ ভাতের অনুষ্ঠানের পর বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার বাসায় গেলে নববধূ সুমাইয়া আফরিনের বাবা খলিলুর রহমান বলেন, আমার মেয়ে এবং তার স্বামী মাহমুদুল হাসান বিয়ের আসরে কী করেছেন আমাদের জানা নেই। আর এ বিষয়ে এখন আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দম্পতির বিয়ের বিষয়ে বা তারা যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করতে পারবো।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এমআরআর/জিকেএস