নওগাঁয় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
নওগাঁয় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় মাঠ জুড়ে শুধু সবুজ পাতার সমারোহ। গত বন্যায় কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। তবে বাজারে দাম ভাল পেলে কষ্ট সার্থক হবে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ৫ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। উন্নতমানের এনকে-৪০, সানসাইন-৯০০, এসগোল্ড কে-৮২৭ ও প্যাসিফিক-৩৩৯ জাতের ভুট্টা আবাদ করা হচ্ছে। জেলার অন্যান্য উপজেলা রাণীনগর, বদলগাছি, মান্দা ও ধামরইহাটে কমবেশি আবাদ করা হলে আত্রাই উপজেলায় বেশি পরিমাণ ভুট্টার আবাদ করা হয়। আত্রাই উপজেলায় ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত বন্যায় আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। আর এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার উন্নত মানের ভুট্টার আবাদ করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় ভুট্টার গাছ ভাল হয়েছে। ভুট্টার গাছে ফুলও এসেছে। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার ভুট্টার আবাদ ভাল হয়েছে এমনটাই জানান কৃষকরা।
আত্রাই উপজেলার চৌড়বাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, গত বার আলু চাষ করেছিলাম। বাজারে দাম ভাল না পাওয়ায় আলু চাষে লোকসান গুণতে হয়েছে। এবার সেই জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আবাদ মোটামুটি ভাল হয়েছে। তবে বাজারে দাম ভাল পেলে ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারব।
ভবানীপুর গ্রামের কৃষক মুজিবর রহমান জানান, প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। প্রতি বছরই কমবেশি ভুট্টার আবাদ করে থাকেন। ভুট্টার আবাদে পরিশ্রম ও খরচ কম এবং লাভও বেশি হয়। এ এলাকার জমি একটু উঁচু ও উর্বর হওয়ায় তা ভুট্টা চাষের জন্য অধিক উপযোগী। ভুট্টা চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান।
এছাড়া কৃষক আব্দুর রহিম, শহিদুল, আয়েত আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানের আবাদে খরচ বেশি এবং দামও কম পাওয়া যায়। যেসব জমিতে আগে ধানের আবাদ করা হতো সেসব জমিতে উন্নত জাতের ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। তুলনামূলক ভুট্টার উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম কম এবং দামও পাওয়া যায়। প্রতি মণ ভুট্টা সাড়ে সাতশ` থেকে ৮শ টাকা। এজন্য এবার আমরা ভুট্টা চাষে ঝুকে পড়েছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচলিক সত্যব্রত সাহা জানান, কৃষকদের উন্নত জাতের ভুট্টা চাষে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এবার জেলায় ৪ হাজার ২৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৫ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৫ মেট্রিক টন।
তিনি আরও বলেন, ভূগর্ভ স্তরের পানি সঞ্চয় করার জন্য কৃষকদের স্বল্প পানি দিয়ে স্বল্প সময়ে ফসল চাষের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
আব্বাস আলী/এসএস/পিআর