চুয়াডাঙ্গা
‘সকাল হলি টিট-টিরে রোদ, অসহ্য গরমে মানুষ অতিয্য'
চুয়াডাঙ্গা সদরের জাফরপুরের জহুরুল ইসলাম। বাদাম, পাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য ফেরী করে মহল্লা ও গ্রামগঞ্জে বিক্রি করেন। তবে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে নিজের বাইসাইকেল রেখে বারবার বিল্ডিং ও গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন।
জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল হলি টিট-টিরে (কড়া) রোদ হচ্চে। আর বিকেল হলি মেঘলা মেঘলা ভাব। এর কারণে পর্যাপ্ত বৃষ্টি পাওয়া যাচ্চে না বা হচ্চে না। এই অসহ্য গরমে মানুষ অতিয্য (অতিষ্ঠ) হয়ে যাচ্চে। গরমে বেচাকিনা করতি পারচিনে। এই জন্যি ছায়ায় বসে আচি।’
দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া। চুয়াডাঙ্গা শহরে এসেছেন রাজমিস্ত্রির কাজ করতে। অসহ্য গরম আর মাথার ওপর সূর্য থাকায় কাজ না করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘রোদির জন্যি কাজ করা যাচ্চে না। সন্দা বেলা একটু বিষ্টি হওয়ার মতো হচ্চে, কিন্তু বিষ্টি হচ্চে না। অতিরিক্ত গরম, কাজ করার কোনো লাইন নেই। কাজ করা যাচ্চে।’

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রকৃতি পুড়ছে। মৃদু থেকে মাঝারি শেষে এখন তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁপিয়ে উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষ। টানা পাঁচদিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে এই তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার (২ জুন) চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শনিবারও তাপমাত্রার পারদ ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক তহমিনা নাসরিন জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল শনিবার দুপুর ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকার কারণে প্রচুর ঘাম হচ্ছে এবং গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ জেলার তাপমাত্রা আগামী এক সপ্তাহ এমন থাকতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে এ জেলার এই মাসে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যেই ওঠানামা করবে।
তহমিনা নাসরিন জাগো নিউজকে আরও বলেন, এ পরিস্থিতি থাকবে আরও কয়েকদিন। দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও এ অঞ্চলে তেমন সম্ভাবনা নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা যদি ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তবে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে তা হয় তীব্র বা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। আর ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলে তা হয় চরম বা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
হুসাইন মালিক/এমআরএম