ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নরসিংদী

চেয়ারম্যানকে লাল কার্ড দেখালেন ৯ ইউপি সদস্য

জেলা প্রতিনিধি | নরসিংদী | প্রকাশিত: ০৯:৩৪ এএম, ১৩ জুন ২০২৩

নরসিংদীর রায়পুরায় ইউপি চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইউপি সদস্যরা। এসময় উত্তরবাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহর বিরুদ্ধে অনাস্থার ঘোষণা দিয়ে লাল কার্ড দেখালেন পরিষদের ৯ ইউপি সদস্য।

একই সঙ্গে স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডসহ জন্মসনদ বিতরণে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির সুস্পষ্ট অভিযোগ তোলে ধরেন। সরকারি প্রকল্পে অনিয়ম ও টি.আর, কাবিখা বরাদ্দে স্বজনপ্রীতির কথাও জানান তারা।

সোমবার (১২ জুন) দুপুরে উপজেলার উত্তরবাখরনগর ইউনিয়নের বড়চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ইউপি সদস্যরা। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে নরসিংদী জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সবার পক্ষ থেকে লিখিত পড়েন ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সোহাগ আহমেদ জীবন। তিনি বলেন, উত্তরবাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্যসহ মোট ১২ জন ইউপি সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ৯ ইউপি সদস্য চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহর বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছি।

আরও পড়ুন: স্ত্রীকে জীবিত করতে ৬ দিন মরদেহের সঙ্গে বসবাস: স্বামী গ্রেফতার

চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহর অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা আতঙ্কিত। শিশুদের স্কুলে ভর্তিতে নাগরিক সনদ প্রদানে জন প্রতি ৫০০ টাকা,জন্ম সনদে বয়স বাড়ানো কমানোতে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা, মৃত্যু সনদ নিতে ১২০০ টাকা, জন্মসনদে ভুল সংশোধনে দেড় হাজার টাকাসহ অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের বয়স বাড়িয়ে বিবাহের সহায়তা করে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে। সরকার নির্ধারিত সব নাগরিক সুবিধা নিতে বিভিন্ন অংকের টাকা গুনতে হচ্ছে উত্তরবাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দাদের। টাকা ছাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা কোনো কাজ করতে পারে না। শুধু তাই নয় বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের জন্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের নামে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গ্রাম আদালত আইন-২০০৬ এর ৫ ধারা লঙ্ঘন করে তার পছন্দের লোকদের দিয়ে অর্থের বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক ভাবে গ্রাম আদালতের বিচার কাজ করে থাকে। সরকার কর্তৃক টি.আর, কাবিখা বরাদ্ধে আংশিক কাজ দেখিয়ে বাকি টাকা লুটপাট করেছে।

চেয়ারম্যানের এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে বাধা দিলে বা প্রতিবাদ জানালে রোষানলে পড়তে হয় ইউপি সদস্যদের। তাছাড়া স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিধান থাকলেও চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহ তা করেননি।

আরও পড়ুন: মন্ত্রী বোঝেননি সাংবাদিকদের প্রশ্ন, মেলেনি অনেক উত্তর

সংবাদ সম্মেলননে উপস্থিত ছিলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রানা মিয়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শব্দর আলী ভূঁইয়া, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুল হক, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোহাগ আহমেদ জীবন , ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জলিল মিয়া, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রহমত আলী, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শিশু মিয়া, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু চাঁদ ও ৭, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মনিরা আক্তার।

এ বিষয়ে জানতে উত্তরবাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহর মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তার বন্ধু ফোনটি ধরেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে চেয়ারম্যান ব্যস্ত আছে জানিয়ে ফোন কেটে দেয়। পরে একাধিক বার ফোন করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সঞ্জিত সাহা/জেএস/জিকেএস