টাঙ্গাইলের ৩২ হাটে বিক্রি হচ্ছে নৌকা, ব্যস্ত কারিগররা
টাঙ্গাইলের নদ-নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নৌকা তৈরি। জেলার ৩২টি হাটে নৌকা বিক্রি হচ্ছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা তৈরির কারিগররা।
স্থানীয়রা জানায়, মধুপুর ছাড়া জেলার বাকি ১১ উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতে নৌকার প্রয়োজন হয়। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে নৌকা তৈরির কাঠমিস্ত্রি (সুতার) ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দিনরাত কাঠ চিরানো, তক্তা ও গুঁড়া বানানো, কাঠ মসৃণ করা, তাঁরকাটা (ছোট লোহা) ও পাতাম (লোহার পাত) দিয়ে তক্তা জোড়া লাগানো ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রিরা। কাজগুলো তারা বাড়ি বা নৌকার হাটগুলোর কাছাকাছি স্থানে করে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলি, মাহমুদনগর, ছিলিমপুর ও ওমরপুর; নাগরপুরের গয়হাটা ও চরসলিমাবাদ; মির্জাপুরের বরাটি, ছাওয়ালি মহেড়া ও চাকলেশ্বর; কালিহাতীর রামপুর, আউলিয়াবাদ ও কস্তুরিপাড়া; বাসাইলের মিরিকপুর, কাউলজানী, রাশড়া করিম বাজার ও ফুলকি; ঘাটাইলে কদমতলী ও হামিদপুর, ধনবাড়ীর পাইস্কা ও কেরামজানী; গোপালপুরের মোহনপুর, নলীন বাজার, নবগ্রাম ও চাতুটিয়া; ভূঞাপুরের ফলদা, গোবিন্দাসী, কুঠিবয়ড়া ও অর্জুনা; সখীপুরের দাড়িয়াপুর ও বহেড়াতৈল এবং দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি, এলাসিন ও ফাজিলহাটে নৌকা বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন: প্লাবিত উপকূলে নৌকা বিক্রির ধুম
নৌকার মিস্ত্রি বলরাম সূত্রধর, বিশ্বজিৎ সূত্রধর, স্বপন সূত্রধর, পলাশ সূত্রধর, হরিমোহন সূত্রধর জানান, প্রায় প্রত্যেক এলাকার বড় রাস্তা এখন পাকা হয়েছে। ফলে দূরের যাত্রার জন্য কেউ বড় নৌকা তৈরি করে না। বর্ষায় এ পাড়া থেকে ও পাড়া যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট নৌকার প্রয়োজন হয়।

তারা জানান, বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরি করে সংসার চলে তাদের। ছোট সময় থেকে বাপ-দাদার কাছে হাতেখড়ি নিয়েছেন তারা। কাঠমিস্ত্রির কাজ করা তাদের নেশা ও পেশা। একটি নৌকা তৈরিতে তিনজনের দুই-তিনদিন সময় লাগে।
বাসাইলের মিরিকপুর গ্রামের মৃত নেপাল সূত্রধরের ছেলে প্রফুল্ল সূত্রধর বলেন, রাশড়া করিম বাজারে নৌকা তৈরির কাজ শুরু করি। আমার সঙ্গে আরও দুজন কাজ করছেন। তারাও ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
তিনি বলেন, বর্ষায় নৌকা তৈরি করি। শুকনো মৌসুমে ঘর, খাট, চেয়ার, টেবিল ড্রেসিং টেবিল, আলনা, আলমারি তৈরি করে হাটে বিক্রি করি। বর্ষা মৌসুমে নৌকার কদর বেড়ে যায়। তাই এসময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে ৮-১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। সময় লাগে দু-তিনদিন। হাটে একটি ছোট নৌকা ১০-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।

কাঠমিস্ত্রি রমেন স্যানাল বলেন, চুক্তিতে নৌকা তৈরি করি। প্রতিদিন ৭০০-১০০০ টাকা মজুরি পাই। বর্ষার সময় এলে আয়-রোজগার ভালোই হয়। শুকনো মৌসুমে সংসারের টুকিটাকি আর কৃষিকাজ করি।
সখী সরকার নামের আরেক মিস্ত্রি বলেন, প্রায় ৩০ বছরের বাপ-দাদার পেশায় আছি। বর্ষার সময় নৌকা তৈরি ও অন্য সময় ঘর তৈরির কাজ করি। বর্ষা মৌসুমে নৌকার খুবই কদর থাকে। এ সময় নৌকার কাজ বেশি করি।
এআরটি/আরএইচ/জিকেএস
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ
- ২ মৃতের বাড়ি থেকে ফেরার পথে সড়কে লাশ হলেন শাশুড়ি-পুত্রবধূ
- ৩ গাজীপুরে ভাড়া ফ্ল্যাটের দরোজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার
- ৪ নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন, ইউনূসের হাত রক্তে রঞ্জিত
- ৫ ঠাকুরগাঁওয়ে সারের ডিলারশিপ বাঁচাতে পদ ছাড়লেন ইউপি চেয়ারম্যান