এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
কৃষকের হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ, খেতে বাধ্য করা হয় প্রস্রাব-থুতু
মাদারীপুরের শিবচরে থানায় আটকে রেখে এক কৃষককে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিবচর থানার এসআই নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।
রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে মামলাটি আমলে নিয়ে এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশীর সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধে আদালতে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ৯ জুলাই রাতে শিবচর উপজেলার সরকারেরচর গ্রামের কৃষক আকমান মাদবরসহ চারজনকে গ্রেফতার করে শিবচর থানাপুলিশ। পরে শিবচর থানার হাজতখানায় তিনজনকে আটকে রাখা হয়। কিন্তু কৃষক আকমান মাদবরকে থানার দোতলায় নিয়ে এসআই নুর মোহাম্মদ নির্যাতন করেন।
বেঞ্চের নিচে মাথা ঢুকিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আকমানের বাম হাত ভেঙে ফেলা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে প্রস্রাব ও থুতু চাটিয়ে খাওয়ানো হয়। এছাড়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এ ঘটনা কাউকে বললে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনার পরদিন আদালতে পাঠানো হয় ভুক্তভোগীকে।

এ ঘটনায় রোববার আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী আকমান মাদবর। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অভিজিৎ চৌধুরী মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী আকমান মাদবর বলেন, ‘কোনো মানুষ এভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করতে পারে আমরা জানা ছিল না। তাও আবার জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। এ ঘটনায় এসআই নুর মোহাম্মদের বিচার না হলে অন্য পুলিশরাও এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস পাবেন। আমি ওই এসআইয়ের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিবচর থানার এসআই নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা। আমি কাউকে কোনো নির্যাতন করিনি বা ভয় দেখাইনি।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী জামাল হোসেন বলেন, ‘থানায় আটকে রেখে কাউকে নির্যাতন করার নিয়ম নেই। পুলিশের এসআই যে কাজ করেছেন, তা ঠিক করেননি। তিনি চরম অন্যায় ও অমানবিক আচারণ করেছেন। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিখুঁতভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম খান বলেন, আদালত যেহেতেু পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, তাই তদন্ত করলে সঠিক ঘটনা বেরিয়ে আসবে। পাশাপাশি যেই অপরাধ করুন না কেন, তার শাস্তি হবে। আইন সবার জন্য সমান।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস