ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন নিজেই রোগী, কাঙ্ক্ষিত সেবা ‘সোনার হরিণ’

জুয়েল সাহা বিকাশ | ভোলা | প্রকাশিত: ০৬:৪১ পিএম, ২২ জুলাই ২০২৩

ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার প্রায় দেড় লাখ মানুষের জন্য রয়েছে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু নেই প্রায়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক-নার্স। এছাড়া ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামেরও ঘাটতি রয়েছে।

ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত সেবা। যে কারণে রোগীদের উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে যেতে হয় চরফ্যাশন কিংবা ভোলা সদর হাসপাতালে। তবে অর্থ সংকটে অনেক রোগীই জেলা সদর হাসপাতালে যেতে পারেন না। এছাড়া দুর্গম পথে যেতে মাঝ পথে রোগী মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটে।

Bhola-5.jpg

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চললেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স। চিকিৎসকের ১০টি পদ থাকলে এখানে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, একজন আরএমও, দুইজন মেডিকেল অফিসার ও সংযুক্তিতে দুইজনসহ মোট ছয়জন চিকিৎসক আছেন। কিন্তু নেই মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি ও শিশু চিকিৎসক। আর ৩০টি নার্সের পদ থাকলে আছেন মাত্র সাতজন। এছাড়া যন্ত্রাংশ ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকায় হাসপাতালে হয় না কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আশ্রাফুল ইসলাম জানান, তার শিশুর এলার্জির সমস্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। কিন্তু এখানে শিশু চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে মেডিকেল অফিসার দেখিয়েছেন। এতে তার শিশুর রোগ ভালো হওয়া নিয়ে শঙ্কিত তিনি।

Bhola-5.jpg

মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন জাহেদা বেগম বলেন, এখানে নারীদের জন্য কোনো গাইনি চিকিৎসক নেই। যে কারণে নারীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা পাচ্ছেন না।

তিনি আরও বলেন, এখানে কোনো সিজারিয়ান করানো হয় না। কেবল নরমাল ডেলিভারি করানো হয়। আর সিজারের জন্য অনেক টাকা খরচ করে স্পিডবোট বা ট্রলার ভাড়া করে নৌপথে চরফ্যাশন কিংবা ভোলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এতে অনেক সময় পথেই মা ও শিশু মারা যায়। আর যাতায়াতের অর্থ সংকট তো আছেই।

Bhola-5.jpg

আরেক রোগীর স্বজন সালমান হোসেন সাজু বলেন, মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো রোগের পরীক্ষা হয় না। ডাক্তার লিখে দিলে বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়। এতে অনেক টাকা খরচ হয়। যদি এখানে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আমাদের বাইরে গিয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হতো না।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তাররা ওষুধ লিখে দিলে সব ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেয় না। বলে তাদের কাছে নেই। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি বেশিরভাগ সময়ই নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। যে কারণে আমাদের বাড়তি খরচ হয়। তাই দ্রুত এমসব সমস্যা সমাধানে দাবি জানাচ্ছি।

Bhola-5.jpg

মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবীর সোহেল চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে রোগীদের সেবা ব্যাহতের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাদের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরও সংকট রয়েছে। নানা সংকটের মধ্যেও রোগীদের সেবা দেওয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এসব সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছ। তারা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

এমআরআর/এমএস