সন্তানদের বিরোধের জেরে সংঘর্ষে জড়ালো দুই গ্রামের অভিভাবকরা
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে মারধরের জেরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলার বালুচর বাজার এলাকায় স্থানীয় খাসমহল ও মোল্লাকান্দি গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় টেঁটাবিদ্ধ মো. জমির আলীকে (৩০) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার স্থানীয় খাসমহল বালুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের টিফিনের সময় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ও স্থানীয় বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আমির হোসেনের ছেলে আবিয়াত বন্ধুদের নিয়ে স্কুলের পাশের কালভার্টে যায়। সেখানে দাঁড়ানো খাসমহল বালুচর এলাকার আলী হোসেনের ছেলে আবিদুলের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা তৈরি হয়। এসময় আবিয়াতকে গলা চেপে মারধর করে আবিদুল।

পরে রাতে ছেলেকে মারধরের বিষয়ে জানতে আবিয়াতের বাবা আমির হোসেন খাসমহল এলাকায় গেলে স্থানীয় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিচার সালিশের দায়িত্ব নেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
তবে সোমবার সকালে বালুরচর বাজারে মোল্লাকান্দি ও খাসমহল গ্রামের লোকজন মুখোমুখি অবস্থান নিলে একপর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আমির হোসেন ও মোল্লাকান্দি এলাকার শহীদ বাউল এবং তাদের প্রতিপক্ষ খাসমহল এলাকার রাসেল মেম্বার ও বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বলের নেতৃত্বে দুই গ্রামের শতশত মানুষ দেশীয় অস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হন।

দফায় দফায় সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বালুচর বাজার এলাকা। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে দুই গ্রামের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে। জড়িতদের আটকে অভিযান চলছে।
আরাফাত রায়হান সাকিব/এমআরআর/এমএস