বক্কারের মালাই চায়ের খ্যাতি পুরো পাবনাজুড়ে
পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক গ্রীনসিটির পাশে নতুনহাট গোলচত্বরে আবু বক্কার সিদ্দিকের চায়ের দোকান। তার মালাই চায়ের কদর পুরো জেলাজুড়ে। বক্কারের চায়ের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় দূর-দূরান্ত থেকেও চা পান করতে মানুষ এখানে ছুটে আসেন। রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরাও তার মালাই চা পছন্দ করেন।
শুক্র ও শনিবার ছুটির দু’দিন ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় বক্কারকে। তাই এ দু’দিন বক্কারের চায়ের স্বাদ নিতে দোকানের সামনে বেশ কিছু সময় অপেক্ষাও করতে হয় ক্রেতাদের।
বক্কারের চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায় অনেকেই বসে চা পান করছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন চা পানের পাশাপাশি দোকানের টিভিতে সিনেমাও দেখছেন। আবার অনেকেই চায়ে চুমুক দিয়ে রাজনীতির আলাপ-আলোচনা করছেন। বেশ কয়েকজন বসার জায়গা না পেয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চা পান করছেন। বক্কার চা বানাতে ও মানুষের হাতে চায়ের কাপ পৌঁছাতেই ব্যস্ত।
নতুনহাট গোলচত্বর এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী ইসলাম হোসেন বলেন, ২০ বছর ধরে চায়ের ব্যবসা বক্কারের। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি মালাই চা বিক্রি করছেন। তার মালাই চা খেতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসে। বিশেষ করে রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান নাগরিক, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার চা খুব পছন্দ করেন। এছাড়াও পাবনা সদর, লালপুর ও ঈশ্বরদী শহর থেকে মানুষজন মালাই চা খেতে ছুটে আসেন।
তিনি আরও বলেন, মালাই চায়ের পাশাপাশি বক্কারের দুই লেয়ার চা, দুধ চা ও লাল চায়ের বেশ সুনাম রয়েছে। অনেকেই তার লাল চা বেশ পছন্দ করেন।
ঈশ্বরদী রেলওয়ের প্রাক্তন কর্মচারী নবাব আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমি ঈশ্বরদী শহর থেকে বক্কারের চা খাওয়ার জন্য এলাম। শহর থেকে বক্কারের চায়ের দোকান প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। এ দোকানে প্রায়ই চা খেতে আসি। এখানে ঈশ্বরদী শহর, পাবনা জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসে। তাছাড়া রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত বিদেশি নাগরিক, সেনা সদস্য, পুলিশের কর্মকর্তা, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারি শ্রমিকদের এখানে চা খেতে দেখি। বক্কারের চায়ের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।

দিয়াড় সাহাপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, সময়-সুযোগ হলেই বক্কার ভাইয়ের দোকানে চা খেতে আসি। তার তৈরি ৪ রকমের চায়ের প্রতিটিই আমার কাছে ভালো লাগে। আমি মালাই চা ও দুধ চা বেশি পছন্দ করি। তার চা অসাধারণ। আমি যখনই আসি তখনই দেখি ভিড় লেগেই আছে। এ দোকানে বেশি ভিড় হয় সন্ধ্যার পর।
বক্কারের দোকানে দুই লেয়ারের চা খেতে এসেছেন সাহাপুর গ্রামের উজ্জল হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বক্কার ভাইয়ের দোকানের দুই লেয়ারের চা বেশ সুস্বাদু। এ চায়ের উপরের অংশ লাল আর নিচের অংশ সাদা। বক্কার ভাইয়ের হাতের চা খুব সুস্বাদু। সকলেই বলে তার হাতে যাদু আছে। তাই সুযোগ পেলেই শুধুমাত্র ছুটে আসি তার চায়ের স্বাদ নেওয়ার জন্য।
চায়ের দোকানদার আবু বক্কার সিদ্দিক ওরফে বক্কার বলেন, মালাই চা তৈরি হয় গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে। দুধ ৭-৮ ঘণ্টা জ্বালিয়ে এ চা তৈরি করা হয়। সেজন্য এ চা খুব সুস্বাদু।
তিনি বলেন, পাঁচ-ছয় বছর আগে নতুনহাট এলাকায় শীতকালীন মহড়ায় একদল সেনা সদস্য এসেছিলেন। তারা মাঝেমধ্যে চা খেতে আসতেন। তাদের মধ্যে থেকে একজন আমাকে মালাই চা তৈরির বিষয়টি বলেন এবং কীভাবে এ চা তৈরি করতে হয় সেটিও জানান। তারপর থেকেই নিয়মিত মালাই চা বিক্রি করছি।
বক্কার বলেন, চা ভালো হওয়ায় একজন খেয়ে আরেকজনকে বলেন। এভাবেই এলাকায় আমার চায়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ কাপ মালাই চা বিক্রি হয়। এছাড়াও লাল চা (রং চা), দুধ চা ও দুই লেয়ারের চা আমি বিক্রি করি। আমার সবধরনের চায়ের কাস্টমার আছে।
চায়ের দোকানে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় শুক্রবার ও শনিবার। এ দু’দিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ বেশি আসে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, চা দোকানের আয় দিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার ভালোই চলছে। ৪ কক্ষের একটি ফ্ল্যাট বাড়ি নির্মাণ করছি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখেই আছি।
এফএ/জিকেএস
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ৫ জনকে ঠেলে দিলো বিএসএফ
- ২ তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে নির্বাচনের গতি-মাত্রা বেড়েছে
- ৩ খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র হাতে পেলো বগুড়ার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি
- ৪ বিএনপি সবসময় কোরআন সুন্নাহর পক্ষে ছিল ও আছে: মির্জা ফখরুল
- ৫ বিএনপি নেতাকর্মীদের অবরোধ, তৃতীয় দফায় ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন বন্ধ