নাটোরে বিএনপির পদযাত্রা
নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ১৫
নাটোরে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত পদযাত্রায় অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের ওপর শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চারজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, সকাল থেকে দুপুর ১২টার পর্যন্ত জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ও পাশে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারী নেতাকর্মীরা অবস্থান করে বিক্ষোভ করায় নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায় কেন্দ্রঘোষিত পদযাত্রা শুরু করতে পারেনি বিএনপি। পরে তারা সরে গেলে দুপুর ১টার দিকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে পদযাত্রা করা হয়।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, সকাল আটটার দিকে পদযাত্রায় অংশ নিতে আসছিলেন সদরের কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ তার অনুসারীরা। এসময় নাটোর চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দুটি কালো রঙের হায়াস থেকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা নেমে ধারালো হাসুয়া ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপরে হামলা করে।
তিনি বলেন, হামলাকারীরা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, একই ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ও ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি তুহিনসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের মধ্যে চারজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, এছাড়া সকালে পদযাত্রায় আসার সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে জেলা যুবদলের নেতা সুজাউল সুজা, যুবদল নেতা এনায়েত উল্লা মিলটন, শরিফুল ইসলাম, জাকির হোসেন, রেজাউল করিম, লিয়ন, ছাত্রদলের মোস্তফা আনাম, মোজাম্মেল হোসেন, ফিরোজ ও গোলাম মোস্তফাসহ ১৫ নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এমপি শিমুল সমর্থকরা বিএনপির অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় ও রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বাসভবনের সামনে অবস্থান করায় নির্ধারিত সময়ে কর্মসূচি শুরু করা যায়নি। তারা স্থান ত্যাগ করার পরে দুপুর ১টার দিকে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে কেন্দ্রঘোষিত পদযাত্রা শুরু করা হয়।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করে দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একদিকে অস্ত্র নিয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নিচ্ছেন। অপরদিকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূচিতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা করে রক্তাক্ত করছেন। এরপরও বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, সদর আসনের মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার অনুসারীরা বিভিন্ন সময়ে বিনা উসকানিতে একের পর এক এসব হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, বিএনপি শহরে আগুন সন্ত্রাসসহ নাশকতা ঘটাতে পারে এমন সংবাদ আমাদের কাছে ছিল। এজন্য দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে অবস্থান নিতে বলেছিলাম যাতে তারা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না ঘটাতে পারে।
তিনি দাবি করেন, বিএনপির ওপর হামলার জন্য তার নেতাকর্মীরা দায়ী নয়। এমনকি বিষয়টি তিনি জানেন না। এটি জনগণকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপির একটি অপপ্রচার ।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ বলেন, নাটোর চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে হামলার খবর পেয়ে তিনি নিজে সেখানে গিয়ে কাউকে পাননি। এ ছাড়া কোথাও তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রেজাউল করিম রেজা/এমআরআর/জেআইএম