পারিবারিক দ্বন্দ্ব
অফিস সহকারীর গাফিলতিতে আলিম পরীক্ষায় বসা হলো না রাশেদার
পরীক্ষায় দিতে পারবে না জেনে কান্নায় ভেঙে পড়ে রাশেদা বেগম
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হলো না রাশেদা বেগম নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর।
রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে ওই শিক্ষার্থীর মা আমিনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রাশেদা বেগম উপজেলার কাশীরাম গ্রামের মৃত রাশেদুল ইসলাম মানিকের মেয়ে। কালিগঞ্জ উপজেলার কাশীরাম আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম মঞ্জুর রাশেদা বেগমের আপন চাচা এবং ওই মাদরাসার অফিস সহকারী।
লিখিত অভিযোগে আমিনা বেগম উল্লেখ করেন, ১৭ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে কাশিরাম আলিম মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে যায় আমার মেয়ে রাশেদা বেগম। কিন্তু রাশেদাকে কর্তৃপক্ষ জানায় ‘তোমার ফর্ম ফিলাপ হয়নি’। তখন মাদরাসার অফিস সহকারী মেয়ের চাচা রফিকুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন ফরম ফিলাপের দিন সার্ভার ছিল না। এ কথা শুনে মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। বাড়িতে এসে ঘটনাটি আমাকে জানায়।
আমি নিজে ঘটনা জানতে মাদরাসা গিয়ে একই কথা শুনতে পাই। পরে মাদরাসার অফিস সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম মঞ্জু আমাকে উগ্র মেজাজে গালিগালাজ করেন।
আমিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর ১৫ বছর হলো। মাদরাসার অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম মঞ্জুর আমার আপন দেবর। তিনি আমার পাওনা জায়গা জমি ভোগ দখল করছে। দীর্ঘদিন ধরে জায়গা জমির বিষয়ে আদালতে মামলা চলে আসছে। এর জেরে ইচ্ছা করে আমার মেয়ের ফরম ফিলাপ করেননি তিনি।
আমিনা আরও বলেন, ১৭ জুলাই প্রধান শিক্ষকের কথামতো রফিকুল ইসলামকে ফরম ফিলাপ বাবদ ২ হাজার টাকা দেই। এরপরও আমার মেয়ে আলিম পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলো না। এ ঘটনায় আমি উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত কাশিরাম মাদরাসার অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আমাকে বলেছিলেন ২৬ জুলাই ফরম ফিলাপের শেষ দিন। কিন্তু সন্ধ্যায় আমি ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে দেখি ২৫ জুলাই সময় শেষ হয়েছে। এ কারণে তার ফরম ফিলাপটি হয়নি।
তবে পারিবারিক শত্রুতা জের নিয়ে কথা উঠলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে কাশিরাম আলিম-মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান (রতন) বলেন, ফর্ম ফিলাপের টাকা দিয়েছে আমি জানি। তবে কী কারণে তার ফরম ফিলাপ হলো না, এ জন্য অফিস সহকারী মঞ্জুকে নোটিশ করেছি। তার জবাব দিতে না পারলে আমরা মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবো।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জহির ইমাম বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
রবিউল হাসান/এসজে/জিকেএস