ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৩২ বছরেও হয়নি স্কুলের ৩০০ মিটার রাস্তা

জেলা প্রতিনিধি | সিরাজগঞ্জ | প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২৩

ফসলি জমির মধ্যে কংক্রিটের দ্বিতল ভবন। নিচতলায় একটি শ্রেণিকক্ষ আর দ্বিতীয় তলায় তিনটি কক্ষ। আশপাশে বসতি নেই বললেই চলে। বর্ষার সময় চারদিকে অথৈ পানি। বর্ষার সময় নৌকা, শুষ্ক মৌসুমে জমির আইল। বছরের পর বছর কখনো পায়ে হেঁটে আবার কখনো নৌকায় কষ্ট করে স্কুলে আসে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী।

প্রধান সড়ক থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় ৩০০ মিটার। স্কুলের প্রবেশ দ্বারে কাদা ও পিচ্ছিল অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয় সেখানে। জমির আইল দিয়ে হেঁটে ও কাদামাটির পথ মাড়িয়ে স্কুলে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। রাস্তা না করেই অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয় ভবন করায় দুর্ভোগের শেষ নেই ওই স্কুলে যাতায়াতকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এমন দুর্ভোগ দেখেও যেন না দেখার ভান করে আছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

jagonews24

সরেজমিনে গেলে জানা যায়, ১৯৯১ সালে ৩৩ শতক জমি নিয়ে দিঘরিয়া-২ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। পরে ২০০৩ সালে এলজিইডির অর্থায়নে ১৩ শতক জায়গার ওপর একটি পাকা দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১০৫ শিক্ষার্থী ও প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসিফ জাগো নিউজকে বললো, আমাদের স্কুলের কোন রাস্তা নেই। যে কারণে প্রতিদিনই জমির আইল দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই জুতা খুলে জমির মধ্যদিয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় জামা-কাপড় কাদা দিয়ে নষ্ট হয়।

jagonews24

অভিভাবক মনোয়ারা খাতুন বলেন, শিক্ষা অফিসের সঠিক তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিনেও স্কুলটিতে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। রাস্তা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাই না। মাঝেমধ্যেই কাদা মাখা শরীরে আমার ছেলে বাড়িতে ফেরে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী জাগো নিউজকে বলেন, বারুহাস-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়ক থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ৩০০ মিটার রাস্তা প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যালয়ের জায়গা সংক্রান্ত ঝামেলা থাকায় রাস্তাটি হচ্ছে না।

jagonews24

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ১৯৯৪ সালের ১৬ অক্টোবর বিদ্যালয়ের নামে জমিদান করেন শুকুর আলী। পরবর্তী ওই মাসের ৩০ তারিখে শুকুর আলীর ভাই সেটি অন্যের কাছে বিক্রি করেন। এটা নিয়ে ঝামেলা থাকার কারণে বিদ্যালয়ের রাস্তা হয়নি। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ের প্রায় ২০ শতক জায়গাও মাহাতাব ফকির নামে এক ব্যক্তি দখল করে চাষাবাদ করছেন।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন খান জাগো নিউজকে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে স্থানীয় কিছু ঝামেলা থাকায় রাস্তাটি হয়নি। তবে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আশা করা যায়, অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের রাস্তা নির্মাণসহ জমি সংক্রান্ত জটিলতা দূর হবে।

এম এ মালেক/এমআরআর/জিকেএস